আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন। যে কারণে তিনি সন্ত্রাসী ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।
Advertisement
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সমীরণ রায়ের লেখা ‘বঙ্গবন্ধু-বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
হানিফ বলেন, গতকাল ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে একজন সাংবাদিক বন্ধু জিজ্ঞাসা করেছিলেন- আপনারা যদি জয়লাভ করেন তাহলে আপনাদের প্রাধানমন্ত্রী কে হবেন। উনারা বলেছেন পরে ভেবে দেখবো বা সময় বলে দেবে। জাতির সামনে এটা বলতে উনারা লজ্জ্বা বোধ করেছেন, কারণ জাতি জানে উনারা যদি জয়লাভ করেন তাহলে উনাদের প্রধানমন্ত্রী ওই সন্ত্রাসী একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকেই বানাতে হবে।
তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেন সাহেব এখন প্রকাশ্যে এ কথাটা (তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন) বলতে কুণ্ঠাবোধ করছেন। লজ্জ্বাবোধ করছেন বলেই উনি আর এটা নিয়ে মুখে বলছেন না। উনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন। যার জন্য এ ধরনের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সঙ্গে হাত মেলাতে কুণ্ঠাবোধ করেননি।
Advertisement
নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অবাক হলাম বিএনপি যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটালো, পুলিশের ওপর হামলা ও পুলিশের গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করার মাধ্যমে, যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হলো, সে বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতা হিসেবে ড. কামাল হোসেন সাহেবের একটি শব্দও আমরা দেখিনি। নিন্দাও উনি করতে পারেননি। উনি এ ব্যাপারে দুঃখ্য প্রকাশও করেননি।
‘তার ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে বিএনপি এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলো, এ জন্য উনি বিএনপিকে ধিক্কার জানাননি এবং জাতির কাছে দুঃখও প্রকাশ করেননি। এর মাধ্যমে এটা প্রমাণিত ড. কামাল হোসেন সাহেব ঐক্যফ্রন্টের নেতা হিসেবে থাকলেও সকল কলকাঠি নড়ে লন্ডন থেকে। ড. কামাল হোসেনও হয়তো লন্ডনের ভয়ে প্রতিবাদ করেননি। অথবা অন্য কোন মূলার লোভে তিনি এ ঘটনার জন্য নিন্দা প্রকাশ বা দুঃখ প্রকাশ করেননি। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে এই জনধিকৃতরা সামান্য কিছু পাওয়ার লোভে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করতে কুণ্ঠাবোধ করেন না,’ বলেন হানিফ।
ড. কামাল হোসেন জাতির সঙ্গে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, উনি (ড. কামাল হোসেন) মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেন। যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গে যে জোট, সেই ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে উনি আঁতাত করে ঐক্যফ্রন্ট করে বলেন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী কোনো শক্তির সঙ্গে আমাদের জোট নেই। একটা অদ্ভুত টাইপের মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।
হানিফ বলেন, বিএনপি এখন নেতৃত্ব ভাড়া করেছে। দ্বারস্থ হয়েছেন খ্যাতনামা আইনজীবী ড.কামাল হোসেনের। কামাল হোসেন সাহেব বিশিষ্ট আইনজীবী এবং আমারা অনেকেই তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখি। যদিও তার অতীত রাজনীতি এ দেশের জনগণের জন্য কখনো কল্যানকর ছিল না। বারবারই তিনি জনগণের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন এমন রেকর্ড নেই।
Advertisement
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বিএনপির রাজনীতির থিংক ট্যাঙ্ক উল্লেখ করে হানিফ বলেন, গতকাল এক টকশোতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের তুলনা করেছেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কামাল হোসেনের তুলনা করা চরম ধৃষ্টতা, এটা চরম অজ্ঞতা।
সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদ, অ্যাডভোটেক বলরাম পোদ্দার, শেখ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক শুকুর আলী শুভ প্রমুখ।
এমএএস/এনএফ/আরআইপি