রাজনীতি

উৎসব আর শঙ্কায় বিএনপির মনোনয়ন কার্যক্রম

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ১২ নভেম্বর ফেনী-১ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের মধ্যদিয়ে শুরু হয় দলটির মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম। পরদিন থেকে চলে মনোনয়নপত্র জমাদান। শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) শেষ হয় বিএনপির মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমাদানের কার্যক্রম।

Advertisement

আজ শনিবার মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমার সংখ্যা দলটির পক্ষ থেকে জানানো হবে। রোববার থেকে চলবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ।

শুরুটা উৎসবমুখর পরিবেশে হলেও বুধবার (১৪ নভেম্বর) নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির নেতাকর্মীরা। পুলিশের দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে দুষ্কৃতকারী। এনিয়ে তিনটি মামলা হয়েছে। আটক হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমাসহ দলটির অঙ্গসহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। এ ঘটনার পর নয়াপল্টনে প্রথম দুদিনের চেয়ে নেতাকর্মীদের ভিড় তুলনামূলক কম দেখা যায়।

আরিফা সুলতানা রুমা পাবনা-৩ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী। আটক হওয়ার আগে মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি জাগো নিউজকে বলেছিলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের নির্বাচনে এলাকার জনগণ আমাকে চায়। তাই আমি মনোনয়ন প্রত্যাশা করি।’

Advertisement

মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল নেতাকর্মীদের সমর্থন নিয়েই আমি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি এবং জমা দিয়েছি। আমি মনোনয়ন পেলে মুন্সীগঞ্জ-২ আসন জাতীয়তাবাদী শক্তিকে উপহার দিতে পারব।’

চাঁদপুর-৪ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হুমায়ূন কবির বেপারী। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত আমি আমার এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে আছি। আমাকে জাতীয়তাবাদী দল মনোনয়ন দিলে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত হবে।’

বাগেরহাট-৪ আসনে মনোনয়নপ্রত্যশী বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক রাজনীতি করছি। পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করি, আশা করছি দলের হাইকমান্ড তার মূল্যায়ন করবে।’

শুক্রবার মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষদিনে বেলা ১১টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মনোনয়নপত্র জমা দেনে তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. ইউনুস আলী।

Advertisement

এদিন কুমিল্লা-১০ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকবে। সরকার তথা নির্বাচন কমিশনের প্রতি প্রত্যাশা জনগণ যেন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে।’

কুমিল্লা-৪ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল আউয়াল খান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনীতিতে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করে। কিন্তু রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এবং অসুস্থ মানসিকতা এই উৎসবকে দুঃসহ যন্ত্রণায় পর্যবসিত করে-এমন একটা পরিবেশে মনোনয়নপত্র জমা ও গ্রহণ কর্মসূচি চলেছে। বাইরে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও অন্তরে দুঃসহ যন্ত্রণা ছিল।’

আউয়াল বলেন, ‘যত ষড়যন্ত্র আসুক বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে আছি।’

৩০০ আসনের সবাইতো আর মনোনয়ন পাবেন না, সেক্ষেত্রে দলীয় সিদ্ধান্ত কি নেতাকর্মীরা মানবেন?- এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশের এই ক্রান্তিকালে জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা পরিলক্ষিত হলেও সার্বিক অর্থে আমরা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেব।’

দলীয় একটি সূত্র জানায়, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিলেও এতে সামিল হননি দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

এদিকে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জানিয়েছেন, শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমার তথ্য জানানো হবে।

কেএইচ/এসআর/এমএস