সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার দায়ে সৌদি আরবের পাঁচ সরকারি কর্মকর্তা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের প্রসিকিউটর বলেছেন, ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে জামাল খাশোগির খুনের সঙ্গে জড়িত ওই পাঁচজনের সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে। তবে হত্যাকাণ্ডে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন এই প্রসিকিউটর।
Advertisement
ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট ও সৌদি রাজ-পরিবারের সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে সৌদি আরবের প্রসিকিউটর এক বিবৃতিতে জড়িতদের সর্বোচ্চ সাজার ঘোষণা দিয়েছেন। বিয়ের প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহের জন্য গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন খাশোগি।
স্বেচ্ছা নির্বাসিত এই সাংবাদিককে কীভাবে হত্যা করা হয়, সেসম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে এক বিবৃতি প্রকাশ করেছিল প্রসিকিউটরের কার্যালয়। এতে বলা হয়, প্রথমে শ্বাসরোধে তাকে হত্যার পর মরদেহ টুকরো টুকরো করা হয়। তবে তার মরদেহ কোথায় রয়েছে সেব্যাপারে কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত জানায়নি সৌদি।
আরও পড়ুন : হত্যাকারী ফোনে বলে, বসকে জানাও কাজ শেষ
Advertisement
প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের পর কনস্যুলেটের বাইরে তুর্কি এক অ্যাজেন্টের কাছে সাংবাদিক খাশোগির খণ্ডিত মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এই খুনের ব্যাপারে যুবরাজ বিন সালমান কোনো তথ্যই জানতেন না।
খাশোগিকে দেশে ফেরত আনতে সৌদি গোয়েন্দাবাহিনীর উপ-প্রধান জেনারেল আহমেদ আল-আসিরিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে ১৫ সদস্যের সমঝোতাকারী একটি দলের প্রধান হিসেবে ইস্তাম্বুলে যান তিনি। ওই মুখপাত্র বলেছেন, আসিরিই কনস্যুলেটের ভেতরে খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দেন ।
প্রথমের দিকে বেশ কয়েকবার খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সৌদি আরব অবগত নয় বলে জানানো হলেও অক্টোবরের মাঝের দিকে নতুন স্বীকারোক্তি দেয় রিয়াদ। ওই সময় সৌদি আরব জানায়, দুর্বৃত্ত এক অভিযানে কনস্যুলেট ভবনে খুন হয়েছেন খাশোগি।
আরও পড়ুন : সৌদিতে বন্যায় নিহত ৩০
Advertisement
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে বলছে, খুনের নির্দেশদাতা এবং এ ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের সাজার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রসিকিউটর। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত ২১ জন কর্মকর্তা বর্তমানে পুলিশি জিম্মায় রয়েছেন। এদের মধ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে এবং অন্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে।
বুধবার সাংবাদিক খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে তুরস্ক। সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বেশ কিছু মিত্র দেশের কাছে ইতিমধ্যে খাশোগি হত্যার অডিও রেকর্ড পাঠিয়েছে আঙ্কারা।
২০১৭ সালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে আসছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি।
সূত্র : এএফপি, রয়টার্স।
এসআইএস/পিআর