গিবত করা হারাম ও মারাত্মক অপরাধ। কোনো অবস্থাতেই গিবত বৈধ নয়। চাই তা কারো সামনে কিংবা পেছনে হোক। তবে মানুষের পেছনে গিবত করা অধিকতর দোষণীয় অপরাধ। কিন্তু জেনে হোক কিংবা না জেনে গিবত করে ফেলেছেন, এখন গিবতের অপরাধ থেকে বাঁচতে করণীয় কী? গিবত না করা থেকে বাঁচতেই বা করণীয় কী?
Advertisement
গিবত যেমন হারাম কাজ, তেমনি গিবতকালীন সময় যারা তা শুনে তারাও সমান অপরাধী। তাই যখন কেউ কারো সামনে গিবতে লিপ্ত হয়, তখন তার উচিত গিবতকারীকে থামিয়ে দেয়া। তা করতে পারলেই গিবতের পরিমান কমে আসবে।
মেরাজ থেকে ফিরে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গিবতকারীর শাস্তির বর্ণনা দেন যে, ‘আমি এমন একদল মানুষের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম; যাদের নখগুলো ছিল পিতলের। আর তা দ্বারা তারা নিজেদের চেহারা ও বুকে অনবরত খামছি মেরে যাচ্ছে।’
এ লোকগুলোর ব্যাপারে জানতে চাইলে হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম আমাকে বলেন, এরা হচ্ছে সে সব লোক যারা দুনিয়াতে মানুষের গোশত খেতো এবং তাদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলতো।’ (মিশকাত) আর মানুষের গোশত খাওয়ার মানেই হলো অন্যের গিবত করা।
Advertisement
গিবত থেকে মুক্তি লাভে করণীয়গিবত করা যাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েগেছে, তাদেরকে এ কাজ থেকে বিরত রাখা অনেক কঠিন। তাইতো মহান প্রভু ব্যভিচারের অপরাধ ক্ষমা করলেও গিবতের অপরাধ ক্ষমা করবেন না। তবে গিবতের ভয়াবহ অপরাধ থেকে বেঁচে থাকতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন-
‘গিবত বা পরনিন্দা ব্যভিচার হতেও জঘন্য অপরাধ। সাহাবাগণ বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! গিবত কিভাবে ব্যভিচার অপেক্ষা গুরুতর অপরাধ হতে পারে?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ব্যভিচার করার পর মানুষ আল্লাহর কাছে তাওবা করলে আল্লাহ তাআলা তাওবা কবুল করেন। কিন্তু গিবতকারী ব্যক্তিকে যে পর্যন্ত ওই ব্যক্তি (যার গিবত করা হয়েছে সে) ক্ষমা না করে; ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহও তাকে (গিবতকারীকে) ক্ষমা করেন না।’ (মিশকাত)
এ হাদিস থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, গিবত জঘন্য অপরাধ। তবে কারো দ্বারা গিবত হয়ে গেলে সে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে ক্ষমা চেয়ে নেবে কিংবা (মারা গেলে) গর্হিত গিবতের ক্ষতিপুরণ স্বরূপ তার গোনাহ মাফে দোয়া করতে হবে।
Advertisement
আরও পড়ুন > গিবত যে কারণে হারাম
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে গিবতের একটি ক্ষতিপূরণ হলো, তুমি যার গিবত বা কুৎসা রটনায় লিপ্ত ছিলে তার জন্য এভাবে দোয়া কর-‘হে আল্লাহ! তুমি আমার ও (যার গিবত করা হয়েছে) তার গোনাহ মাফ করে দাও। (মিশকাত)
আশা করা যায়, গিবতকারীর কাছ থেকে ক্ষমা লাভে তাকে না পেলে তার জন্য এভাবে দোয়া করলে হয়ত আল্লাহ তাআলা গিবতকারীকে ক্ষমা করে দিতে পারেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গিবত করা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো পদ্ধতিতে নিজের জন্য এবং যার গিবত করা হয়েছে তার জন্য দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর