রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছে। বুধবার দুপুর পৌনে ১টার দিক থেকে এ ধাওয়া-পাল্টা শুরু হয়েছে। পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানেও আগুন দিতে দেখা গেছে। গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
Advertisement
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজপথে এই প্রথম এমন উত্তাল পরিস্থিতির উদ্ভব হলো।
ঘটনার বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিনা উসকানিতে মনোনয়ন ফরম নিতে আসা নেতাকর্মীদের ওপর পরিকল্পিত হামলা করেছে সরকার।
অন্যদিকে বিনা উসকানিতে পুলিশের ওপর বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা করেছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার ডিসি আনোয়ার হোসেন।
Advertisement
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় একটি ককটেল বিস্ফোরণেরও খবর পাওয়া গেছে।
এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন ফরম বিক্রি কেন্দ্র করে সড়কে বিএনপি নেতাকর্মীরা ভিড় করছিলেন। এতে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। পুলিশ সড়ক খালি করার চেষ্টা করছিল। এ থেকেই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সূত্রপাত।
যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন মামুন দাবি করেন, মিজানুর রহমান ও ফিরোজ বেগম নামে একজন নারী ছররা গুলিবিদ্ধসহ আরও ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না তা নিয়ে শুরু থেকে নানা মত ছিল। এর মধ্যে ১১ নভেম্বর রোববার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেয়। এর পরদিন মনোনয়ন ফরমও বিক্রি শুরু করে বিএনপি। মনোনয়ন ফরম বিক্রির শুরুর দিন থেকেই বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
Advertisement
এরমধ্যে গতকাল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার সময় শোডাউন করা নির্বাচনী আচরণ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন উল্লেখ করে এমনটি না করতে সতর্ক করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির আদেশে বলা হয়, ‘তফসিল ঘোষণার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা জমা দেয়ার সময় মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনসহকারে মিছিল ও শোডাউন করা হচ্ছে, যা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী আচরণ বিধিমালা ২০০৮-এর ৮ নম্বর বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
ইসির এ আদেশ আসার পরদিনই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপি জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল। ভয়াবহতার চূড়ান্ত মাত্রা ছাড়িয়েছিল বাসে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনাগুলো। তবে ওই নির্বাচন বর্জন করার পর ধীরে ধীরে আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে বিএনপি। এরপর ওই নির্বাচনের বছরপূর্তি ঘিরে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশের রাজ্যনৈতিক পরিস্থিতি।
এরপর সময়ের সাথে প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছিল বিএনপি।
এআর/কেএইচ/এসআই/এনএফ/আরআইপি