রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তিন কর্মকর্তা। এ নিয়ে ৪১ জনের মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েসের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন। তিন কর্মকর্তা হলেন-সামছুল আহম্মেদ, আলী আহসান মিলন ও সিরাজুল ইসলাম।
সাক্ষ্য শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য বুধবার (১৪ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন আদালত।
এদিন জাবালে নূর পরিবহনের মালিক শাহাদাত হোসেনসহ পাঁচ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
Advertisement
গত ২৫ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস আসামিদের অব্যাহতির আবেদন না মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন করেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
তারা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই বাসচালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ। তাদের মধ্যে শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। কাজী আসাদ ও জাহাঙ্গীর আলম এখনও পলাতক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ২৯ জুলাই দুপুরে চালক ও তাদের সহকারীরা বেশি যাত্রী নেয়ার লোভে জিল্লুর রহমান উড়াল সড়কের ঢালের সামনে রাস্তা ব্লক করে দাঁড়ায়। এ সময় চালক মাসুম বিল্লাহ সেখানে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ শিক্ষার্থীর ওপর বাস উঠিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী নিহত ও ৯ জন আহত হয়।
নিহতরা হলো- ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)। সেদিন বাস দুটি দুই থেকে তিনবার একে অপরকে ওভারটেক করে।
Advertisement
পরে দুর্ঘটনায় নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। এরপর মিরপুর ও বরগুনা জেলায় অভিযান চালিয়ে জাবালে নূরের বাসের চালক এবং সহযোগীদের গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)।
গত ১ আগস্ট সন্ধ্যায় র্যাবের পক্ষ থেকে জাবালে নূরের একটি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেনকে (৬০) গ্রেফতারের খবর জানানো হয়। গ্রেফতার হওয়া ছয়জনকে পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জাবালে নূরের যে তিন বাসের রেষারেষিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে সেগুলোর নিবন্ধন নম্বর হলো- ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭, ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের চাপায় নিহত হয় দুই শিক্ষার্থী। বাসটি চালাচ্ছিলেন মাসুম বিল্লাহ। ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের চালক ছিলেন জুবায়ের এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০ নম্বরধারী বাসটির চালক ছিলেন সোহাগ।
জেএ/এএইচ/আরআইপি