দেশজুড়ে

রাজশাহী কারাগারে আত্মহত্যা : কনস্টেবলের বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আটোচালক জনির আত্মহত্যার ঘটনায় বিকাশ নামের এক জেলা পুলিশের কনস্টেবলসহ দুইজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। মঙ্গলবার সকালে বাদী পক্ষের আইনজীবী সাবেক পিপি ও রাজশাহী জেলা লিগ্যাল এইডের প্যানেল অ্যাড. মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  নিহত আটোচালক জনির মা সেলিনা বেগম বাদী হয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন আমলী আদালতে (‘খ’ অঞ্চল) হত্যার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিকাশ জেলা পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরির সুবাদে নগরীর বুলনপুর ঘোষপাড়া এলাকায় স্বপরিবারে বসবাস করেন। ঘটনার ১৫ দিন আগে পুলিশ কনস্টেবল বিকাশের সঙ্গে আত্মহননকারী আটোচালক জনির একটি বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। এসময় কনস্টেবল বিকাশ জনিকে মারধর করেন। এর প্রতিবাদ করলে বিকাশ জনিকে হত্যার হুমকি দেন। একই এলাকায় ভাড়া থাকার সুবাদে মামলার দ্বিতীয় আসামি শ্রী উত্তমের সঙ্গে তার পূর্ব পরিচয় ছিলো। ঘটনার দুই দিন আগে বিকাশ বুলনপুর এলাকার উত্তমের হাতে এক হাজার টাকা দিয়ে আটোচালক জনিকে মদপান করিয়ে কৌশলে জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে আসার কথা বলেন। তার কথামতো উত্তম জনিকে গত ৩ জুলাই রাত ১০টার দিকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মদ খাইয়ে রাত আড়াইটার দিকে তাকে রিকশাতে করে রাজশাহী জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে গিয়ে বিকাশের হাতে তুলে দেন। পরে বিকাশ পুলিশ লাইনের ভেতরে একটি কক্ষে অজ্ঞান অবস্থায় জনিকে আটকে রেখে সারা রাত লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। পরের দিন তার অবস্থা বেগতিক দেখে নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশকে ডেকে মিথ্যা মোটরসাইকেল চুরির অপবাদ দিয়ে গ্রেফতার করানো হয়। পরে থানা পুলিশ তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। ওই দিনই জনি বিনা চিকিৎসায় মারা যান বলে উল্লেখ করা হয়। পরে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, জনি ৫ জুলাই কারাগারে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তার ময়নাতদন্ত রিপোর্টেও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। বিষয়গুলো নিয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কর্মকর্তা বজলুর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে জানান, জনি বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন এ কথা সঠিক নয়। তিনি কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে সে কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর তিনি নিজেই বিষয়টি তদন্ত করেছেন। তদন্ত চলাকালীন অবস্থায় জনির সঙ্গে থাকা হাজতিদের জিজ্ঞাসাবাদে সদ্য বউ কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত জনি অনেকটা হতাশাগ্রস্থ ছিলেন বলে জানা গেছে। আর এ ঘটনার জের ধরেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জাগো নিউজকে জানান, মামলা সংক্রান্ত কোনো কাগজ এখনো আদালত থেকে থানায় এসে পৌঁছেনি। মামলার কপি থানায় পৌঁছালে তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।   শাহরিয়ার অনতু/এমজেড/পিআর

Advertisement