খেলাধুলা

ডাবল সেঞ্চুরি করে মুশফিকের ‘অন্যরকম’ উদযাপন

এমন নয় যে ডাবল সেঞ্চুরি আগে করেননি মুশফিক। শ্রীলঙ্কার মাটিতে ২০১৩ সালের গল টেস্টে দেশের ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটার তিনি। তবু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির মাহাত্ম্যটাই অন্যরকম।

Advertisement

কেননা দেশের ইতিহাসের প্রথম এবং বিশ্ব ইতিহাসের উইকেটরক্ষক (চলমান) হিসেবে দুইটি ডাবল সেঞ্চুরি করা প্রথম ক্রিকেটার এখন তিনি। এছাড়াও দেশের মাটিতে, নিজ দেশের দর্শকদের সামনে, গ্যালারিতে থাকা নিজের বাবার সামনে এটিই তার প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। তাই তো উদযাপনেও দেখা গিয়েছে ভিন্নতা।

দ্বি-শতক থেকে তখন মাত্র এক রান দূরে মুশফিকুর রহীম। বোলিংয়ে এলেন জিম্বাবুয়ের লেগস্পিনার ব্রেন্ডন মাভুতা। ১৯৯ রানে থাকা মুশফিক একবারও ঝুঁকি না নিয়ে কাটিয়ে দেন পুরোটা ওভার। বেড়ে যায় দুইশ করার অপেক্ষা।

পরের ওভারে আসেন সিকান্দার রাজা। স্ট্রাইকে মিরাজ। ওভারের দ্বিতীয় বলটা পয়েন্ট অঞ্চলে ঠেলে দিয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ চাইলেন এক রান নিতে, তবু দুই রানের সুযোগ থাকা মুশফিকই জোর করে নিলেন দুই রান। পরের বলে লংঅন দিয়ে ছক্কা মেরে নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি তুলে নেন মিরাজ। পরের বলেই সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন মুশফিককে।

Advertisement

ওভারের পঞ্চম বলে সিকান্দার রাজার করা মিডল স্ট্যাম্পের ডেলিভারিটি আলতো করে লেগসাইডে ঠেলে দিয়েই নিজের দুইশতম রানটি নেন মুশফিক। দেশের ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান এবং বিশ্বের প্রথম উইকেটরক্ষক হিসেবে দুইটি ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েন তিনি। বিশেষ এই সেঞ্চুরির উদযাপনটাও ছিলো বিশেষ ধরনের।

দুইশতম রানটি নিয়েই সেঞ্চুরির পরে যেমন দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে, বুক চিতিয়ে আকাশপানে চেয়ে উদযাপন করেছিলেন, ঠিক একইভাবে করেন ডাবল সেঞ্চুরি হওয়ার পরেও। তবে এবার করেন বাড়তি উদযাপন। হাতের গ্লাভস খুলে প্যাভিলিয়নের দিকে দুই হাত দিয়ে ভালোবাসা চিহ্ন একে নিজের এই সেঞ্চুরিটি যেন প্রিয়তমা স্ত্রীকে উৎসর্গ করেন তিনি।

এরপর নিজের উচ্ছ্বাসের প্রকাশ শেষে মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরুপ সেজদায় পড়ে যান মুশফিক। তার ডাবল সেঞ্চুরির পরে খুব বেশিক্ষণ খেলেনি বাংলাদেশ। মুশফিক দেশের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে সাকিব আল হাসানের করা সর্বোচ্চ ২১৭ রান টপকে যাওয়ার পরপরই ইনিংস ঘোষণা দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

১৬০ ওভার ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ৫২২ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেট জুটিতে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৪৪ রান যোগ করেন মিরাজ এবং মুশফিক। দেশের ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২১৯ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটিকে নিজের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসে রূপ দেয়া মিরাজ অপরাজিত ছিলেন ৬৮ রান করে।

Advertisement

এসএএস/এমএস