যুক্তরাজ্যের অভিনেত্রী শার্লি হেলার মারা যাওয়ার আগে ভিন্নধর্মী কাজ করে গেছেন। যখন চিকিৎসকরা তাকে কয়েক মাসের আয়ু বেধে দেন, তখন তিনি নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য ওই তহবিল তোলা শুরু করেছিলেন। নিজের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য প্রায় সাত হাজার পাউন্ড তহবিল সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।
Advertisement
গত অক্টোবরে বুকে ব্যথা শুরু হওয়ায় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে জানান, তিনি আর মাত্র পাঁচ সপ্তাহ বেঁচে আছেন। এরপর নিজের শেষকৃত্যানুষ্ঠান আয়োজনের জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ শুরু করেন তিনি। এর কারণ হিসাবে অভিনেত্রী শার্লি বলেছিলেন, তার ১৬ বছর বয়সে ভাইকে হারিয়েছে পরিবার।
সুতরাং কোন বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে এমন হওয়া উচিত না যে, তাদের সব সন্তানের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাজ তারা করবেন।ওয়েব ভিত্তিক নেটফ্লিক্সে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া আউট’ল কিং চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেছিলেন। তার আশা ছিল, সেটির সম্প্রচার তিনি দেখে যেতে পারবেন। কিন্তু চলচ্চিত্রটি মুক্তির দুইদিন আগে বুধবার তিনি মারা যান।
তার তহবিল সংগ্রহের পাতায় একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হেলার ঘুমের ভেতরেই মারা গেছেন। সবার সহায়তা এবং অনুদানের জন্য শার্লি সবার কাছে কৃতজ্ঞ ছিল, যা তার শেষ সপ্তাহগুলোকে চমৎকার করে তুলেছিল।
Advertisement
২০১৭ সালে প্রথম ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ে শার্লি হেলারের। তবে এ বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি বলেছিলেন, টিউমারটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে এবং তিনি খুব তাড়াতাড়ি নিউক্যাসল যেতে পারবেন। সেখানেই তিনি বসবাস করতেন। মৃত্যুর কিছুদিন আগে হেলার বলেছিলেন, আমার বাবা-মা এর আগেই একটি সন্তান হারিয়েছে। ১৯৯৯সালে আমার ভাই মারা গেছে। সুতরাং এর ধরণের দুঃখের ঘটনা তাদের জন্য আগেও ঘটেছে।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, তারা আবার একই ধরণের পরিস্থিতিতে পড়বে, এটা ভাবতেই আমার খারাপ লাগছে। কারো নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরিকল্পনা করা হয়তো উচিত নয়, কিন্তু আমি তাদের ওপর সেই চাপ কমিয়ে দিতে চেয়েছি এবং আমার বাবা-মায়ের জন্য যা আরেকটু সহজ করে দিতে পারি, আমি অবশ্যই তা করবো।
৩শ জনের বেশি মানুষ তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য ৬৯৫৬ পাউন্ড দিয়েছেন। যা দিয়ে শার্লি হেলারের বাবা-মা, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ব্যয়ভার বহন এবং স্কটল্যান্ডে আসার খরচ বহন করতে পারবেন। মৃত্যুতে যেমন অনেক দাতা শোক জানিয়েছেন,আবার অনেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যেকোনো সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
মার্টিন রবসন নামের একজন দাতা হেলারকে চিনতেন না। তিনি লিখেছেন, আমি তোমার কথা শুনেছি রেডিও নিউক্যাসলে এবং তোমার জন্য খুবই খারাপ লাগছে। তোমার ক্যান্সারের কথা শুনে আমার কান্না পেয়েছে। তবে তুমি খুবই সাহসী ছিলে। আশা করি, যেরকম শেষকৃত্যানুষ্ঠান তুমি আশা করেছো, এই অর্থে তেমনটাই তুমি পাবে।
Advertisement
টিটিএন/পিআর