রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার মামলায় ওই কলেজের আরও তিন শিক্ষার্থী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনজনই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। তারা প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দেন।
Advertisement
রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েসের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন- শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী পিংকা সরকার, জয়ন্ত রানী বিশ্বাস ও নাঈম রহমান। সাক্ষ্য শেষে তাদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
এ নিয়ে বাদীসহ ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য সোমবার (১২ নভেম্বর) দিন ধার্য করেছেন আদালত। এদিন জাবালে নূর পরিবহনের মালিক শাহাদাত হোসেনসহ পাঁচ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ২৫ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস আসামিদের অব্যাহতির আবেদন না মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন করেন।
Advertisement
গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম অভিযোগপত্রটি জমা দেন। এতে ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই বাসচালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ। তাদের মধ্যে শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। কাজী আসাদ ও জাহাঙ্গীর আলম এখনও পলাতক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ২৯ জুলাই দুপুরে চালক ও তাদের সহকারীরা বেশি যাত্রী ওঠানোর লোভে যাত্রীদের কথা না শুনে, তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে জিল্লুর রহমান উড়াল সড়কের ঢালের সামনে রাস্তা ব্লক করে দাঁড়ায়। এ সময় চালক মাসুম বিল্লাহ সেখানে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ জন ছাত্রছাত্রীর ওপর বাস উঠিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী নিহত ও ৯ জন আহত হয়। নিহতরা হলো- ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)। সেদিন বাস দুটি দুই থেকে তিনবার একে অপরকে ওভারটেক করে।
এ দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। এরপর মিরপুর ও বরগুনা জেলায় অভিযান চালিয়ে জাবালে নূরের তিন বাসের তিন চালক এবং তাদের দুই সহযোগী এনায়েত ও রিপনকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)। এরপর গত ১ আগস্ট সন্ধ্যায় র্যাবের পক্ষ থেকে জাবালে নূরের একটি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেনকে (৬০) গ্রেফতারের খবর জানানো হয়। গ্রেফতার হওয়া ছয়জনকে পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জাবালে নূরের যে তিন বাসের রেষারেষিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে, সেগুলোর নিবন্ধন নম্বর হলো ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭, ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের চাপায় নিহত হয় দুই শিক্ষার্থী। বাসটি চালাচ্ছিলেন মাসুম বিল্লাহ। ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের চালক ছিলেন জুবায়ের এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০ নম্বরধারী বাসটির চালক ছিলেন সোহাগ।
Advertisement
জেএ/জেএইচ/পিআর