দশম জাতীয় সংসদের পাঁচ বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয় করেও কোনো সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এমপিদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়নি। গড়ে প্রতিটি বৈঠকে সদস্যদের অর্ধেকের বেশি উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমনকী মাসে যতগুলো বৈঠক করার কথা ছিল তাও করতে পারেনি কমিটিগুলো।
Advertisement
নেই সুপারিশ বাস্তবায়নের কোনো ‘সুনির্দিষ্ট’ হিসাব। সংসদে প্রতিবেদন উপস্থাপনের ক্ষেত্রেও তাদের অবহেলা লক্ষ্য করা গেছে। এসব কারণে সরকারের কাজে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য গঠিত সংসদীয় কমিটিগুলোর অবস্থা ছিল নড়বড়ে।
জানা যায়, ১১টি সংসদীয় কমিটি এবং ৩৯টি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিসহ মোট ৫০টি কমিটি রয়েছে সংসদে। গত পাঁচ বছরে ২৫ হাজার ৪৯৪টি সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ করেছে কমিটিগুলো। কিন্তু বাস্তবায়নের কোনো পরিসংখ্যান নেই কারও কাছে। তবে সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে কাগজে-কলমে মন্ত্রণালয় দেখিয়েছে যে, প্রায় সব সুপারিশই বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু জাগো নিউজের অনুসন্ধান দেখা গেছে, এসব সুপারিশের অর্ধেকও বাস্তবায়ন হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদবিষয়ক গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বর্তমান এমপিদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী। এছাড়া ১৫৩ জন এমপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। তাদের অধিকাংশেরই প্রধান লক্ষ্য টাকা আয়। তাই সংসদের প্রতি তাদের নজর কম। বেশির ভাগ এমপিই নিজ নিজ ফাইল নিয়ে সচিবালয়ে দৌড়াদৌড়ি করেছেন।
Advertisement
কমিটির ব্যয় প্রায় ১০ কোটি টাকা
জাতীয় সংসদের সহকারী সচিব ফারহানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দশম জাতীয় সংসদ গঠনের পর ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সংসদীয় কমিটিগুলো তিন হাজার ২২৫টি বৈঠক করেছে।
সংসদের লাইব্রেরিতে রাখা ২০১৭ ও ২০১৮ সালের সাপ্তাহিক বুলেটিন থেকে সংসদীয় কমিটিগুলোর বৈঠকের হাজিরা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেশির ভাগ কমিটির সদস্য সংখ্যা ১০ জন হলেও গড়ে ছয়জন করে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সংসদ সদস্য (পারিতোষিক ও ভাতাদি) আদেশ, ১৯৭৩ (মে ২০১৬ পর্যন্ত সংশোধিত) অনুযায়ী, একজন এমপি সংসদীয় কমিটিতে উপস্থিত থাকলে যাতায়াত বাবদ কিলোমিটার (সড়ক পথে) প্রতি ১০ টাকা করে পান। এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার সময় যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয় সেই ঠিকানা অনুযায়ী তারা যাতায়াত ভাড়া পান। যে এলাকা থেকে তিনি নির্বাচিত হন, সেই এলাকার ঠিকানা শপথের সময় ব্যবহার করা হয়।
Advertisement
সংসদের হিসাব শাখা জানায়, বৈঠকে উপস্থিতির জন্য গড়ে দুই হাজার টাকা করে তুলেছেন এমপিরা। গড়ে ছয়জন করে উপস্থিতি ধরে এতগুলো বৈঠকের যাতায়াত বাবদ সংসদের খরচ হয়েছে তিন কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
বৈঠকে হাজিরার জন্য এমপিদের এক হাজার করে টাকা দেয়া হয়। সেই হিসাব অনুযায়ী, গড়ে ছয়জনের পেছনে খরচ হয়েছে এক কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
প্রতিটি বৈঠকে এমপিরা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা, সংসদের কর্মকর্তাসহ ৬০ জনের নাস্তা নির্ধারিত থাকে। নাস্তা বাবদ জনপ্রতি ১০০ টাকা বরাদ্দ হিসাবে প্রতিটি বৈঠকে ছয় হাজার টাকা খরচ হয়। সেই হিসাবে গত পাঁচ বছরে নাস্তার পেছনে খরচ হয়েছে এক কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সংসদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিসহ বিভিন্ন খরচ মিলে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে হিসাব শাখা জানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এত টাকা খরচ করেও তাদের সংসদে টানতে না পারা আইনের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা নয়। তবে ঐতিহ্যগতভাবে দশম সংসদ ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।‘
তিনি বলেন, ‘আইন মানুষ তৈরি করে, রীতিনীতিও মানুষের কার্যক্রমের মাধ্যমে তৈরি হয়। কোনোটির মূল্য কম নয়। আমি আশা করি, সবার অংশগ্রহণে আগামী সংসদ বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাবে।’
কমিটির বৈঠকে উপস্থিতির হার অর্ধেক
কমিটিগুলোর বৈঠকে উপস্থিতি দেখতে সংসদের লাইব্রেরিতে রাখা সাপ্তাহিক বুলেটিনগুলো পর্যালোচনা করা হয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলোর বৈঠকের কোনোটিতে শতভাগ উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়নি।
সংসদের কার্য-উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সেখানে সদস্য হিসেবে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য এই কমিটির বৈঠকে তুলনামূলক উপস্থিতি বেশি। সংসদের অধিবেশনে কী কী হবে, কতদিন চলবে- এ সংক্রান্ত কাজ নির্ধারণ করা ১৫ সদস্যের কমিটিতে এই সময়ে (২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত) আটটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু একটিতেও শতভাগ উপস্থিতি ছিল না। সর্বোচ্চ উপস্থিতি ১৬তম, ১৭তম ও ২২তম বৈঠকে ১২ জন এবং ১৮তম, ১৯তম ও ২১তম বৈঠকে ১১ জন করে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া কার্য-উপদেষ্টা কমিটির ১৫তম বৈঠকে ১০ জন, ২০তম বৈঠক ১০ জন উপস্থিত ছিলেন।
শত বৈঠক করা সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫ জন হলেও কোনো কমিটিতে সব সদস্য উপস্থিত হতে পারেননি। চলতি বছর কমিটির অনুষ্ঠিত ৯৫তম, ৯৬তম ও ৯৭তম বৈঠকের কোনো তথ্য বুলেটিনে নেই।
নিয়ম মেনে বৈঠক করে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। চলতি বছরের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ৫৮টি বৈঠকে করেছে কমিটি। ৫০তম বৈঠকে ছয়জন, ৫১তম বৈঠকে ছয়জন, ৫২তম বৈঠকে সাতজন, ৫৩তম বৈঠকে সাতজন, ৫৪তম বৈঠকে ছয়জন, ৫৫তম বৈঠকে চারজন, ৫৬তম বৈঠকে সাতজন, ৫৭তম বৈঠকে পাঁচজন এবং ৫৮তম বৈঠকে আটজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কমিটি এই সময়ে (২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত) মাত্র তিনটি বৈঠকে করে। কমিটির ২৩তম বৈঠকে পাঁচজন, ২৪তম বৈঠকে ছয়জন এবং ২৫তম বৈঠকে পাঁচজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এই কমিটির সভাপতি সাবেক খাদ্যমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক (টাঙ্গাইল-১)।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি গত পাঁচ বছরে মাত্র ২৩টি বৈঠক করে। উপস্থিতিও হতাশাজনক। কমিটির ১৯তম বৈঠকে ছয়জন, ২০তম বৈঠকে পাঁচজন, ২১তম বৈঠকে পাঁচজন এবং ২২ ও ২৩তম বৈঠকে সাতজন করে সদস্য উপস্থিত ছিলেন। কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগের টিপু মুন্সী (রংপুর-৪)।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত কমিটি পাঁচ বছরে মাত্র ২৯টি বৈঠক করেছে। চলতি বছরের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র দুটি বৈঠক করেছে কমিটি। ১০ জন সদস্যকেও হাজির করতে পারেনি এই কমিটি। ২৮তম বৈঠকে সাতজন এবং ২৯তম বৈঠকে নয়জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটি এই সময়ে (২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত) মাত্র চারটি বৈঠক করে। কমিটির ২৪তম বৈঠকে ছয়জন, ২৫তম বৈঠকে পাঁচজন, ২৬তম বৈঠকে ছয়জন এবং ২৭তম বৈঠকে আটজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অন্য সব কমিটিগুলোর চিত্র একই।
এ বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ও সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব বৈঠকে যে সব বিষয়ে আলোচনা হয়, তা সংসদে যায়। তাই সংসদীয় কমিটির বৈঠকগুলোতে উপস্থিত থেকে সদস্যদের আলোচনায় অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে যদি কোনো আইন প্রণয়নের বিষয়ে আলোচনা হয় তাহলে অবশ্যই কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকার প্রয়োজনীয়তা আছে। তা না হলে এ বিষয়ে সংসদে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে কার্যকর ভূমিকা পালন করা যায় না। আইন প্রণয়ন ছাড়া অন্য কোনো বিষয় হলে উপস্থিত না থাকলেও পরবর্তীতে আলোচনা করে নেয়া যেতে পারে।’
সুপারিশ বাস্তবায়ন
জাতীয় সংসদের সহকারী সচিব ফারহানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, দশম জাতীয় সংসদ গঠনের পর ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত ২৫ হাজার ৪৯৪টি সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ করে কমিটিগুলো। কিন্তু কমিটিগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নের হিসাব এককভাবে কোথাও উল্লেখ নেই।
জাগো নিউজের নিজস্ব অনুসন্ধানে কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে সুপারিশ ও বাস্তবায়নের প্রতিবেদন এবং সংসদে উত্থাপিত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কমিটির প্রদত্ত সুপারিশের অর্ধেকও বাস্তবায়ন হয়নি। এ নিয়ে সরকারি দলের এমপি ও সংসদীয় কমিটির সভাপতিদের মধ্যেও ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়।
সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই এই কমিটির মূল কাজ। কমিটি তাদের ২১তম বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের খোয়া যাওয়া সমুদয় অর্থ ফেরত আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে। ২০১৬ সালের ১০ মে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই সুপারিশ করা হলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। ওই একই বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ খোয়া যাওয়া নিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ আরও চারটি সুপারিশ করা হয়। এর একটিও বাস্তবায়ন হয়নি।
ওই কমিটির সভাপতি সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী। তার বাড়ি শরিয়তপুরের নড়িয়া থানায়। তিনি প্রায় প্রতিটি বৈঠকে নড়িয়ার নদী ভাঙন রোধের জন্য ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেন। কিন্তু তেমন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ভয়াবহ নদী ভাঙনের কবলে একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি শওকত আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘সংসদীয় কমিটিগুলোর সভাপতিদের ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেও তা হয়নি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের। এজন্য অনেক কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন হয় না। সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিরও অধিকাংশ সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য অনেকে বৈঠকের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
তবে মন্ত্রণালয়ের হিসাব বলছে অন্য কথা! সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২৪তম বৈঠকে উত্থাপিত সুপারিশ ও বাস্তবায়ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান সংসদ গঠনের পর ১৫৫টি সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে জননিরাপত্তা বিভাগ সংশ্লিষ্ট সুপারিশ ছিল ৯৬টি। এর মধ্যে ৮৫টি বাস্তবায়িত হয়েছে। তবে এর ৩৪টি সিদ্ধান্ত চলমান থাকবে। আর বাস্তবায়নের জন্য চলমান রয়েছে আটটি সুপারিশ। তিনটি আপাতত বাস্তবায়ন যোগ্য নয় বলে মন্ত্রণালয় জানায়।
সংসদীয় কমিটিগুলোর সাচিবিক দায়িত্বপালনকারী একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে জানান, সরকারের শেষ সময়ে কে আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যাবে। নতুন সংসদে সবকিছু নতুন করে শুরু হবে। তাই যে যেভাবে পারছে সুপারিশ বাস্তবায়নের হার দেখাচ্ছে।
নিয়ম মানেনি অধিকাংশ কমিটি
সংসদের কার্যপ্রণালীর বিধি অনুযায়ী, সংসদীয় কমিটিগুলো প্রতি মাসে একটি করে বৈঠক করবে। ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি কমিটিকে মাসে কমপক্ষে দুটি করে বৈঠক করার নির্দেশনা দেন। মাসে একটি করে বৈঠক করলে গত সাড়ে চার বছরে প্রত্যেকটি কমিটির কমপক্ষে ৫৮টি বৈঠক হওয়ার কথা। মাত্র দুটি কমিটি এটি প্রতিপালন করতে পেরেছে। সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিধি মেনে এই সময়ের মধ্যে ১০৪টি বৈঠক করেছে।
সবচেয়ে কম বৈঠক করেছে বেসরকারি সদস্যদের বিল ও বেসরকারি সদস্যদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত কমিটি। এই কমিটি মাত্র পাঁচটি বৈঠক করেছে।
সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী, বছরে একটি করে প্রতিবেদন দেয়ার কথা প্রতিটি কমিটির। কিন্তু কোনো কমিটিই তা পালন করেনি। অধিকাংশ কমিটি কোনো প্রতিবেদনই জমা দেয়নি।
এসব বিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এমপিদের প্রধান কাজই হলো সংসদীয় কাজে অংশ নেয়া। কিন্তু অনেক সময় এর ব্যত্যয় দেখা যায়। এটি ঠিক নয়। এজন্য এমপিদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার, যাতে তারা বেশি করে সংসদীয় কাজে মনোযোগী হতে পারেন।’
এইচএস/এমএআর/বিএ/এমএস