শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগামী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন তা চ্যালেঞ্জ করবেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহ। তার দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
Advertisement
বিক্রমসিংহের দলের এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সম্প্রতি দেশটিতে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে তা আরও প্রকট আকার ধারণ করলো। আর প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা ও সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহ ক্ষমতার লড়াইয়ে সংসদ ছেড়ে এবার আদালতের মুখোমুখি হবেন।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহের মন্ত্রিসভার সাবেক অর্থমন্ত্রী মঙ্গলা সামারাবিরা শনিবার রাজধানী কলোম্বোতে বলেন, ‘আমরা সিরিসেনার এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাব। আমরা আদালতে লড়াই করবো, সংসদে লড়াই করবো এবং নির্বাচনে লড়াই করবো। বাকিটা সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ।’
গত শুক্রবার সরকারের মেয়াদ পূর্তির দু’বছর আগেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগামী বছরের ৫ জানুয়ারী নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। তার এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই মূলত আদালতে যাবে বিক্রমসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি।
Advertisement
এর আগে গত ২৬ অক্টোবর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বিক্রমসিংহকে বরখাস্ত করেন। ওই দিন রাতেই তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে মন্ত্রিসভা ভেঙে দেন। এরপরই মূলত দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়।
বরখাস্তের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে ২৭ অক্টোবর পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন ডাকেন বিক্রমসিংহ। সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য তার পক্ষে রয়েছেন দাবি করে তিনি এ অধিবেশন ডাকেন। কিন্তু বিক্রমসিংহের অধিবেশন আহ্বানের পর পরাজয়ের আশঙ্কায় কয়েক দফা অধিবেশন স্থগিত করে শেষ পর্যন্ত পার্লামেন্ট ভেঙে দেন সিরিসেনা।
শ্রীলঙ্কার সংসদের মোট ২২৫ টি আসনের মধ্যে এখনো বিক্রমসিংহের প্রতি সমর্থন রয়েছে ১০৫ জন সংসদ সদস্যের। আর বিক্রমসিংহের প্রতি সমর্থন ছিল সংখ্যালঘু তামিলদের রাজনৈতিক জোট তামিল ন্যাশনাল অ্যালাইন্সের। সংসদে দলটির মোট আসন ১৫টি। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা ভোট পাশ করতে হলে প্রয়োজন হতো ১১৩টি ভোটের।
মূলত এমন পরাজয় ও অভিসংশনের আশঙ্কা থেকে নিজের মনোনীত প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসেকে বাঁচাতেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। এবার বিক্রমসিংহ যদি আদালতে সিরিসেনার এ সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে চ্যালেঞ্জ করে তাহলে দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। আর এ অস্থিরতার নেপথ্যের নায়ক মূলত ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে থাকা প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা ও পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহ।
Advertisement
এসএ/এমএস