দেশজুড়ে

ঋণের বোঝা সইতে না পেরে মাকে হত্যা

দীর্ঘ ৬ মাস পর সিলেটের জকিগঞ্জে সোনাবান বেগম হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ঘাতক ছেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মাকে হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। মামলার এজহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলার ৭ নং বার ঠাকুরী ইউনিয়নের খারিজা গ্রামের মৃত সোনাফর আলীর ছেলে মানই মিয়া (৪৫) একই উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের তিরাশী গ্রামে শ্বশর বাড়িতে ঘর জামাই হিসেবে বসবাস করে আসছিলো। অন্যদিকে মানই মিয়ার মা সোনাবান বেগম (৫৫) খারিজা গ্রামে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় মানই মোহাম্মদপুর গ্রামের ব্যবসায়ী নাজু আহমদ, শরীফ উদ্দিন, হাতিড়হর গ্রামের কৃষক শফিক উদ্দিন, তিরাশী গ্রামের চিকন আলীর কাছ থেকে টাকা ধার আনে।  পরবর্তীতে ওই ধারের টাকা ফেরত দিতে না পেরে মা সোনাবান বেগমকে জমি বিক্রি করে টাকা দিতে বলে। সোনাবান টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মানই তার মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে চলতি বছরের ২৪ মার্চ রাত ১ টায় মাকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে সন্তান অসুস্থের কথা বলে নিয়ে যাওয়ার পথে মাকে এলোপাথারিভাবে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে মানই নিজের অপরাধ ধামাচাপা দেয়ার জন্য আহত সোনাবানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সোনাবানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।পরে মানই নিজে বাদী হয়ে যাদের কাছ থেকে টাকা ধার এনেছিলো তাদের হত্যা মামলায় আসামি করে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় দুই ব্যবসায়ীসহ ৪ জনকে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনোয়ার মামলার তদন্ত করে নিশ্চিত হন হত্যার সঙ্গে মানই জড়িত। তিনি মানইকে গত রোববার সিলেটের বিশ্বনাথ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মানই নিজ হাতে মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এদিকে, সোমবার বিকেলে তাকে জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে মানই মিয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে নিজের অপরাধ স্বীকার করে ওই হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়।এ ব্যাপারে এসআই মনোয়ার জানান, মানই ধার করে আনা টাকা ফেরত দিতে না পেরে মায়ের নামে থাকা জমি বিক্রির জন্য মাকে চাপ দেয়। মা জমি বিক্রি না করায় মাকে কুপিয়ে হত্যা করে সে। পরে যারা টাকা ধার দিয়েছিলো তাদের ফাঁসাতে আসামি করে মামলা দায়ের করে। এ বিষয়টি তিনি সোমবার আদালতে স্বীকার করেছে।ছামির মাহমুদ/এসএস/এমআরআই

Advertisement