মতামত

ভোট নামের ইস্টিশন

এখন পথে ঘাটে শুধু কথা নিয়েই কথা। কথা মানে সংলাপ। গণভবনের পথে রাজনৈতিক দলের লম্বা লাইন। ক্ষুদ্রবার্তার যুগেও তারা চিঠি লেখায় শ্রম দিচ্ছেন। কতো নাম না জানা দল আছে, তা জানা যাচ্ছে বা দেখা যাচ্ছে। জনগণের হয়তো এতোটুকুই লাভ। এই অখ্যাত রাজনৈতিক দল গুলোর কাছ থেকে।

Advertisement

ইসলামী ঐক্যজোটের একজন নেতাকে টকশোতে বলতে শুনলাম- সংলাপে গিয়ে অনেক দলের নাম জেনেছি। অনেককে প্রথম দেখেছি। যারা নাম না জানা দল গুলোর নেতা। বলা যায় প্রধান রাজনৈতিক দল গুলোর বাইরে যাদের নির্বাচন কমিশনের খাতায় নাম তোলা আছে, বা দেয়ালে পোস্টার আছে তাদের এখন ভরা মওসুম।

জোটের নামে অপেক্ষাকৃত বড় দলের সখা হয়ে ভালমন্দ খাবারের দাওয়াতে যাওয়া যাচ্ছে। এই রঙ তামাশার দল গুলোকে নিয়ে জনগণের তামাশা করারও রুচি নেই সময় নেই। অপেক্ষাকৃত বড় দলের ক্ষয়িষ্ণু নেতাদের কথাও জনগণ কানে তুলছে না। তারা অপলক তাকিয়ে আছেন বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ কখন কোন দিকে মোড় নেয়।

কখন তারা কঠিন, আর কখন কোমল। তবে সাময়িক সময়ের জন্য ড.কামাল হোসেন, আ স ম রব, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না’র দিকেও মানুষের মনোযোগ আছে। এদের ঘটকালিতেই দুই মেরু নিকটবর্তী হয়েছে। সংলাপের দুই অধিবেশন হয়ে গেছে জাতীয় ঐক্যের।

Advertisement

আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে তাদের দুই দফা আলোচনার পর তারা যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, তাতে আপাতত মনে হচ্ছে না মান্নান ভূইঁয়া-আবদুল জলিলের পরিণতি পাবে এই সংলাপ। দুইপক্ষের প্রতিক্রিয়াতেই হেমন্তের বাতাস বইছে।

সংলাপ সাত নভেম্বরেই শেষ হয়ে গেছে একথা বলা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করা মানেই আলোচনা জলে গেছে বলা যাবে না। দ্বিতীয় দফার সংলাপে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়ে বিএনপিকে আদালতে যাবার পরামর্শ দেয়ার মধ্যেও ইতিবাচক ইংগিত রয়েছে। বিএনপি বা জাতীয় ঐক্য সেই ইংগিত বুঝতে পেরেছে বলেই আলোচনার ফল কি হলো তার এক কথায় উত্তর তারা দেননি।

প্রথম দফায় বিএনপি মহাসচিব বলেছিলেন, তিনি বা তার দল সন্তুষ্ট হতে পারেনি। কিন্তু দ্বিতীয় দফার পর তিনি ওই প্রকার মন্তব্য করলেন না। বরং বলেছেন তারা জনগণের কাছে যাচ্ছেন। লংমার্চ করে রাজশাহী যাবেন। রাজশাহী যাবার কথা তাদের আগেই ছিল। সিলেট, চট্টগ্রামের মতো সমাবেশ করার। এখন শুধু এর সঙ্গে লংমার্চ যুক্ত হচ্ছে। পাঁচ-ছয়টি স্থানে তাদের সমাবেশ করার কথা। এক প্রকার নির্বাচনী সমাবেশ করাও তারা শুরু করছেন এর মাধ্যমে বলা যায়। দুই পক্ষই ভোটের গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি চলবে দর-কষাকষি।

দর-কষাকষি কোথায় গিয়ে সমাঝোতায় পৌঁছবে বলা মুশকিল। তবে ছাড় দিতে দুই দলই মুখিয়ে আছে এবং অনেকটাই উদার তা বলা যায়। তবে এক দুই লাফে তারা ধামাকা ছাড় দিয়ে দেবে তা বলা যাবে না। কারণ মাঠের নেতা কর্মীদের কাছে তাদের এক ধরনের মান ইজ্জতের বিষয় আছে। এক লাফে বেশি দূর নেমে গেলে দলের পরাজয় হলো বলে সাধারণ নেতা কর্মীরা হতাশ হতে পারেন। ভোটের আগে রয়ে সয়ে তাই দুই পক্ষই ছাড়ের দিকে এগুচ্ছে। লক্ষ্য ভোট নামের ইস্টিশন।

Advertisement

লেখক : হেড অব নিউজ, সময় টিভি।

এইচআর/জেআইএম