মতামত

প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিন

প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল। ষড়ঋতুর এদেশে একেকটা ঋতু আসে ভিন্ন ভিন্ন রুপ নিয়ে। দিনের বেলায় গরম থাকলেও রাতে শীত পড়ছে। তবে শীত এখনো জেঁকে বসেনি। গতকাল বুধবার সকালে কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় চারদিক। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, উপরের বায়ুমণ্ডলে তাপমাত্রা গরম থাকলেও মেঘ-বৃষ্টির কারণে নিচের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় হঠাৎ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে মাঝে এমনটা হতে পারে।

Advertisement

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, একদিনের ব্যবধানে বুধবার দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে ৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তামপাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আজ তা কমে হয়েছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ষড়ঋতুর এই দেশে একেকটি ঋতু একেক রূপ রঙ নিজে হাজির হয়। অভ্যস্ত মানুষজন প্রকৃতির এই পালাবদলের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেন খুব সহজেই। শীত আসতে এখনো অনেকটা দেরি থাকলেও এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। কারণ শীতে অনিবার্যভাবেই প্রকৃতিতে ঘটে কিছু পরিবর্তন। হেমন্তের ফসল কাটা শেষ হয়। নবান্নের সঙ্গে পিঠাপায়েসের আয়োজন চলে গ্রামাঞ্চলে। এই নগরেও এখন মৌসুমী পিঠা বিক্রেতারা তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছে। শীত একদিকে যেমন উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে। অন্যদিকে তীব্র শীত জীবনযাত্রা বিপন্ন করে তোলে মানুষজনের। বিশেষ করে দরিদ্ররা শীতের কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। এই সময় শীতজনিত নানা রোগব্যাধিও দেখা দেয়। একারণে শীতের জন্য আলাদা একটি প্রস্তুতি রাখা প্রয়োজন।

শীত মৌসুমে শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত নানা রকম রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। ডায়রিয়া, জ্বর, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয় শিশুরা। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে ঋতুর পরিবর্তন হবে। এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য প্রতিটি ঋতুই যেন উপভোগ করা যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকা অত্যন্ত জরুরি। শীতজনিত রোগব্যাধি থেকে মানুষজনকে রক্ষার করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখতে হবে। তীব্র শীতে দরিদ্র ও অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য গরম কাপড় সরবরাহ করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

Advertisement

শুধু সরকার নয় সমাজের বিত্তবানরা এ জন্য এগিয়ে আসতে পারেন। কবি সুকান্ত যেমন করে সূর্যের কাছে উত্তাপ চেয়েছিলেন ‘রাস্তার ধারের উলঙ্গ ছেলেটির জন্য’- তেমনিভাবে আমাদের মধ্যে শীতে মানবিকতার উন্মেষ ঘটাতে হবে। আর তখনই শীত কষ্টের ঋতু না হয়ে উৎসবের ঋতু হয়ে উঠবে।

এইচআর/জেআইএম