প্রথম তিন দিনের নয় সেশনের সাত সেশনেই প্রাধান্য ছিল জিম্বাবুয়ের। ভাল-মন্দ আর জয়-পরাজয়ের নিরিখে মাপলে ১ , ২ ও ৩ নভেম্বর যে কয় সেশন খেলা হয়েছে, তার বেশির ভাগ সময় মাসাকাদজার দল ছিল এগিয়ে। আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বাংলাদেশ ছিল পিছনের পায়ে।
Advertisement
তবু তাইজুল ইসলামের অসাধারণ বোলিংয়ে ম্যাচে ফেরা, আর তৃতীয় দিন শেষ ঘন্টায় ইমরুল কায়েস আর লিটন দাসের অপরাজিত থাকা- দুয়ে মিলে মরা গাঙ্গে বাণ ডাকার মত একটা সম্ভাবনার সূর্য উঁকি দিচ্ছিল বাংলাদেশের আকাশেও। তা দেখে টাইগাররা কতটা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, বুকে কেমন সাহস সঞ্চার হয়েছিল, কে জানে?
তবে কোচ স্টিভ রোডস হয়েছিলেন আশাবাদী। রীতিমত জয়ের স্বপ্নই দেখছিলেন এ ইংলিশ। তাই তো তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সিলেট টেস্ট জেতার একটা ফর্মুলাও আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন। তার হিসেব ছিল, তৃতীয় দিন তিন সেশনের দুটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। আর ম্যাচ জিততে চাই চতুর্থ দিনের তিনটে মানে সবক'টা সেশন জেতা। তাহলেই ম্যাচের বড় সময় পিছনে থাকলেও শেষ হাসি হাসবে রিয়াদের দল।
কিন্তু তার সে আশা পূরন কিংবা স্বপ্ন সাধ পূরনের পথে শুরুতেই বাধা। তিন সেশনের একটি মানে প্রথমটিতে জেতেনি বাংলাদেশ। জিততে চেয়ে হেরে গেছে। সকালের তথা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন সেশনটিতেই হেরে গেছে টাইগাররা।
Advertisement
মঙ্গলবার প্রথম সেশনে পরিষ্কার প্রাধান্য জিম্বাবুয়ের। যেহেতু আগের দিন আলোর স্বল্পতায় প্রায় ৩০ মিনিট খেলা হয়নি। তাই আজ নির্ধারিত সময়ের আধঘন্টা আগে শুরু হয়ে আড়াই ঘন্টার প্রথম সেশনে মাসাকাদজার দলের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ।
আগের দিন বিনা উইকেটে ২৬ রান নিয়ে চতুর্থ দিন খেলা শুরু করা বাংলাদেশ আজ প্রথম সেশনে পাঁচটি উইকেট খুইয়ে পরিষ্কার ব্যাকফুটে।
দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস আর লিটন দাসের সাথে মুুমিনুল হক, অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং নাজমুল হোসেন শান্ত সাজঘরে।
বিনা উইকেটে ২৬ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করা বাংলাদেশ প্রথম সেশন শেষে চরম সংকটে। রান ৫ উইকেটে ১১১। তার মানে আজ আড়াই ঘন্টায় যোগ হয়েছে ৮৫ রান।
Advertisement
রান ঠিকই আছে। কিন্তু উইকেট পড়েছে বেশি। বেশি বলা হয়তো কম হয়ে গেল। অনেক বেশি। ইনিংসের অর্ধেকটাই শেষ হয়ে গেছে।
কোচ স্টিভ রোডস যে ফর্মুলা এঁটেছিলেন, তা ধরলে আজ প্রথম সেশনে বড়জোর এক কি দুই উইকেট হারানোই ছিল আদর্শ। কিন্তু তার দ্বিগুণের বেশি উইকেটের পতন ঘটেছে।
যেহেতু হাতে সময় বাকি ছিল দুদিন। তাই রান করার তাড়া ছিল অনেক কম। এ দু দিনে ৯০ + ৯০ = ১৮০ ওভারে দরকার ছিল ২৯৫ রানের। তার মানে প্রতি সেশনে ৭০/৮০ রান করে করলেও সমস্যা ছিল না। সেখানে আজ প্রথম সেশনে টাইগাররা তুলেছেন ৮৫ রান। যা প্রয়োজনের তুলনায় কম তো নয়ই, বরং বেশি।
কিন্তু রান উঠলে কি হবে? দরকারি কাজটিই হয়নি। যেখানে ১ থেকে ২ উইকেট খোয়ানোই ছিল যথেষ্ট, সেখানে পতন ঘটেছে পাঁচ পাঁচটি উইকেট। মানে ইনিংসের প্রথম অর্ধেক শেষ প্রথম সেশনেই।
এখন রইলো বাকি দুই। পরের দুই সেশন জেতা প্রায় অসম্ভব। উইকেটে একা মুশফিকুর রহীম। সঙ্গী হিসেবে পাবেন প্রথম ইনিংসের টপ স্কোরার আরিফুল হককে।
এখন পরের দুই সেশনে জিততে হলে বাংলাদেশকে প্রায় অসাধ্য সাধন করতে হবে। লাঞ্চের পরের সেশনে এক উইকেট হারানোও চলবে না। লাঞ্চ থেকে চা বিরতির সময়ের দুই ঘন্টায় কোন উইকেট দেয়ার অবকাশ নেই।
কারণ এখন হাতে যে সময়টুকু আছে, তাতে চালিয়ে খেললেও লক্ষ্যে পৌঁছানো খুব কঠিন। সেক্ষেত্রে পরের দুই সেশনে প্রয়োজন ১৮৪। তার মানে প্রতি সেশনে করতে হবে ৯২। যেটা আপাতঃ দৃষ্টিতে প্রায় অসম্ভব। তাই রানের দিকে তাকানোর সুযোগ নেই।
এআরবি/এমএমআর/এমএস