বিশ্বের প্রতিটি নারী নাকি গড়ে আড়াই জন শিশুর জন্ম দেন। কিন্তু ‘দরিদ্র’ দেশগুলোতে শিশু জন্মের হার ধনী দেশগুলোর তুলনায় বেশি কেন? হ্যাঁ, বিভিন্ন দেশে শিশু জন্মের হার সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের দেয়া কিছু ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো-
Advertisement
দরিদ্র দেশের কোনো দম্পতির ঘরে গড়ে পাঁচ থেকে ছয়টি শিশু জন্মগ্রহণ করে। এসব অনেক সময় বেশি সন্তানকে সংসারের সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবেও দেখা হয়ে থাকে। যদিও অনেক ক্ষেত্রে শিশুকে সংসারের সচ্ছলতার জন্য কাজও করতে হয়। পূর্ব আফ্রিকার সোমালিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এখানে।
দরিদ্র দেশগুলোতে একজন নারী কয়টি সন্তানের জন্ম দেবে, তা নির্ভর করে পুরুষের ওপর। বিয়ে, চাকরি বা সন্তানের জন্ম দেয়ার মতো কোনো সিদ্ধান্তই নেয়ার অধিকার নেই নারীদের। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর উদাহরণ দিয়েছে। তারা আরও বলেছেন, শহরের তুলনায় গ্রামের নারীদের সন্তান বেশি হয়ে থাকে, যা আসলে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
এ ছাড়া অনেক দরিদ্র দেশের নারীদের গর্ভনিরোধক বা জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। স্কুল, ডাক্তার বা কোথাও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় না, অর্থাৎ বহু নারী না চাইলেও তারা গর্ভবতী হচ্ছেন।
Advertisement
জনসংখ্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মারাইকে ড্যোরিং বলেন, বিশ্বের ৪৩টি দেশের নারীরা গড়ে চারটি সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন। আর এই দেশগুলোর মধ্যে ৩৮টি-ই আফ্রিকায়।
অন্যদিকে জার্মানি, আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ার মতো অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশের নারীরা গড়ে এক বা দুটি সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন। এসব দেশে জনসচেতনতা তুলনামূলকভাবে বেশি, সন্তান জন্ম দেয়ার সিদ্ধান্ত নারী নিজেই নিতে পারেন। তাছাড়া শিল্পোন্নত দেশগুলোতে সন্তান জন্মের পরও নারীরা চাকরি করতে চান। এসব দেশের মায়েদের মতে, শুধু বাচ্চা জন্ম দিলেই হবে না, তাদের সুস্থ ও সুন্দর জীবন দেয়ার নিশ্চয়তাও থাকতে হবে।
গত বছর জার্মানিতে মোট ৭৮৫,০০০ শিশুর জন্ম হয়েছে, যা ২০১৬ সালের চেয়ে কিছুটা কম। জার্মানিতে কোন বছর কতজন শিশু জন্ম নেয় এবং কতজন শিশু কখন স্কুলে যাবে, তাদের কতজন শিক্ষকের প্রয়োজন তার একটি হিসেব থাকে। ভবিষ্যতে কতজন মানুষ জার্মানিতে বসবাস করবেন সে হিসাবও করে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে
Advertisement
এমবিআর/এমএস