ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। যোগ দেয়ার পর পরই তিনি ছুটে যান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের কাছে।
Advertisement
এ সময় বঙ্গবীরকে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে কামাল হোসেন বলেন, আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার এটি। আপনি (বঙ্গবীর) বারবার ঝুঁকি নিয়েছেন দেশ রক্ষায়। আপনাকে সঙ্গে পেয়ে আমার কোনো চিন্তা নেই। আমি এখন অবসরে গেলে চিন্তা নেই। সোমবার মতিঝিলে কাদের সিদ্দিকীর রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঐক্যফ্রন্টের যোগ দেয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন তিনি। যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু ও মোহাম্মদ শাহজাহানসহ গণফোরামের নেতাদের মধ্যে মফিজুল ইসলাম খান কামাল, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আ ও ম শফিক উল্লাহ, মোশতাক আহমেদ, এম শফিউর রহমান খান বাচ্চু এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নাসরিন সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক, প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী, শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, আমিনুল ইসলাম তারেক এবং ডাকসু’র সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ প্রমুখ।
যোগদান উপলক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে লড়াই, সংগ্রামের মাত্রা বেড়ে গেল। সমস্ত মেধাশক্তি দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ও মুক্তির জন্য কাজ করব। বর্তমানে স্বৈরাচারের ভূমিকায় যারা আছেন, তাদের হটাতে পারব।
তিনি আরও বলেন, এক সময় আমার দুরবস্থা ছিল। আমার জন্য শেখ হাসিনা পাত্রী খুঁজেছিলেন। তিনি এখনও আমার পাশে আছেন। আমার এমন লড়াই সংগ্রাম কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করেন বলেই দেশের আজ পরিস্থিতি অন্যরকম উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক দিন পরে হলেও বিরোধীদলগুলোকে তিনি ডেকে আলোচনা করছেন। সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। আলোচনায় যখন বসা শুরু হয়েছে তখন থেকেই দেশের পরিস্থিতি ভালো হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। কাদের সিদ্দিকী বলেন, ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠানে বি. চৌধুরীর যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি যোগ দেননি। কারণ তিনি ড. কামালকে সহ্য করতে পারেন না। তিনি ও তার দল দাম্ভিকতার সঙ্গে এগুচ্ছে। মাহী বি. চৌধুরীর সংসদে আসার দরকার নেই। কারণ দেশবাসী তাকে চায় না।
Advertisement
অন্যদিকে ড. কামাল হোসেন বলেন, কাদের সিদ্দিকী শুধু মুক্তিযুদ্ধ করেনি। ঝুঁকি নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। আবার তিনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আরও বড় ঝুঁকি নেন। তিনি বলেন, বঙ্গবীর বারবার জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। এ ধরনের ঝুঁকি নেয়ার পরও তিনি (বঙ্গবীর) এখনও আমাদের মধ্যে আছেন- এটা বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার। সেদিন বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর সবাই ভেবেছিল আমরা দমে গেছি। আর সামনের দিকে যেতে পারব না। কিন্তু তিনি প্রতিরোধ করে দেখিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিবাদেও বাংলাদেশ গর্জে উঠতে পারে। বঙ্গবীরের যোগদানের মধ্য দিয়ে আমরা সবাই অনুপ্রাণিত হয়েছি।
আ স ম আব্দুর রব আবেগ প্রবণ হয়ে বলেন, ‘চলমান লড়াই গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি আমলে না নিলে তিনি রেহাই পাবেন না। প্রধানমন্ত্রীর পায়ের নিচে মাটি নেই। এ জন্য ভোট চুরি বা জালিয়াতির জন্য ইভিএম পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছেন তিনি। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দাবি মেনে নেন। প্রধানমন্ত্রী দেশকে রক্তাক্ত, সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দেবেন না।’
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মন্টু বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আমরা আশা করি।
এইউএ/জেএইচ/পিআর
Advertisement