ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে পাওয়া টাকার ওপর থেকে গেইন ট্যাক্স ছাড় এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) বন্ড বিক্রি করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ শুরু করলেও পুঁজিবাজারে তার কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
Advertisement
চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস দরপতন হলো।
মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৫৯টি। আর ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের এমন দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৩৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
Advertisement
অপর দুটি মূল্য সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৫২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পাওয়া টাকার ওপর থেকে গেইন ট্যাক্স ছাড় দিলেও কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি শর্ত হলো ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউজের মালিকরা কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে শেয়ার বিক্রিবাবদ যে অর্থ পাবেন তা বিনিয়োগের জন্য ৬ মাস সময় পাবেন। ফলে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর অর্থ সহসা পুঁজিবাজারে আসার সম্ভাবনা কম। এছাড়া আইসিবিও সেভাবে বিনিয়োগ করছে না।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এক সদস্য বলেন, কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে শেয়ার বিক্রি করে পাওয়া অর্থ আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে জমা করতে হবে। ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হওয়ার পর ৬ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। এক-একজন সদস্য তিন কোটি ৬০ লাখ থেকে তিন কোটি ৮০ লাখ টাকার মতো করে পাচ্ছেন। সে হিসাবে টাকার পরিমাণ খুব বেশি না এবং বিনিয়োগের জন্য ৬ মাস সময় পাওয়ায় প্রথম এক-দুই মাসের মধ্যে এ টাকা বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা কম।
এদিকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার মূল্য সূচক ও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৩৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫২৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
Advertisement
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে কেপিসিএলের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৬ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের ১৯ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিবিএস কেবলস।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড, নূরানী ডাইং, ড্রাগন সোয়েটার, এসকে ট্রিমস, ফার্মা এউড, ইনটেক লিমিটেড এবং ভিএফএস থ্রেড ডাইং।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএসসিএক্স ৪৭ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৭৪৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৪১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৬টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির।
এমএএস/বিএ/জেআইএম