জাতীয়

ফিটনেসবিহীন গাড়ির তালিকা করতে ১৬ সদস্যের কমিটি

সারাদেশের ফিটনেসবিহীন পরিবহনের তালিকা করতে হাইকোর্টের নির্দেশে ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী তানভির আহমেদ।

Advertisement

সড়ক পরবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধিকে আহ্বায়ক করে এবং বিআরটিএ এর সচিবকে সদস্য সচিব করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, পুলিশ সদর দফতরের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, হাইওয়ে পুলিশের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, বিআরটিএ এর একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একজন করে প্রতিনিধি, সড়ক ও জনপদ অধিদফতরের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতরের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের একজন উপডুক্ত প্রতিনিধি, এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট, বুয়েট এর একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি ও ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি। এছাড়া বিশিষ্ট গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত মামলার রিটকারী আইনজীবী তানভির আহমেদ বলেন, আদালতের নির্দেশ ছিল- সারাদেশের ফিটনেসবিহীন পরিবহনের তালিকা তৈরির জন্য একটি কমিটি গঠনের। সেই নির্দেশনা অনুসারে গত ২৩ অক্টোবর বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। এই কমিটিকে সারাদেশে যানবাহনের ভেতরের এবং বাইরের ফিটনেস দেখে একটি তালিকা তৈরি করে আদালতে দাখিল করবেন।

Advertisement

এর আগে গত ৩১ জুলাই বিশেষজ্ঞ কমিটির দ্বারা ফিটনেসহীন পরিবহনের ওপর জরিপ চালিয়ে তিন মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, বিআরটিএ চেয়ারম্যান এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সচিবের নেতৃত্বে অভিজ্ঞদের দ্বারা কমপক্ষে ১৫ সদস্যের একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন আদালত। পরে ওই কমিটির দ্বারা ফিটনেসহীন পরিবহনের ওপর জরিপ করে তিন মাসের মধ্যে তা প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালত রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী তানভির আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ।

রিটকারী আইনজীবী তানভির আহমেদ বলেন, এ মামলার শুনানিকালে তারেক মাসুদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া সংক্রান্ত মামলার সিআইডি রিপোর্ট আদালতকে দেখানো হয়েছে। ওই রিপোর্টে গাড়ির ফিটনেসের অভাবের বিষয়টি উঠে এসেছে। তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজিবের মামলার ছবিও আদালতকে দেখানো হয়েছে। সে বাসটিও আনফিট ছিল।

এ ছাড়াও গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার সঙ্গে জড়িত বাসের ছবিও আদালতকে দেখানো হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার এসব বাসের একটিতেও ফিটনেস ছিল না। তাই এ বিষয়ে আদালতে রুল জারিসহ নির্দেশনা চাওয়া হয়।

Advertisement

পরে রিটের শুনানি নিয়ে ফিটনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ফিটনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চান আদালত।

চার সপ্তাহের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সচিব, স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয় সচিব, বিআরটিএ চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের (বিআরটিএ) পরিচালক, বিআরটিএ ইনফোরসমেন্ট বিভাগের পরিচালক ও পুলিশের আইজিকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ থেকে ফিটনেসহীন পরিবহনের তালিকা করতে ১৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

প্রসঙ্গত, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এর আগে গত ৯ জুলাই সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের নোটিশ পাঠান অ্যাডভোকেট তানভির আহমেদ। নোটিশে দশ দিনের মধ্যে এর জবাব চাওয়া হয়। কিন্তু সে জবাব না পেয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। গত ২৬ জুলাই হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট দায়ের করা হয়। সে রিটের শুনানি নিয়ে আদালত নির্দেশনাসহ রুল জারি করেন।

এফএইচ/এমবিআর/পিআর