কক্সবাজার পৌরসভার পাহাড়তলীতে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর গুলিতে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুলিবিদ্ধ স্ত্রী মারা যান। এর আগে শুক্রবার সকালে পৌরসভার পশ্চিম পাহাড়তলীস্থ হালিমাঘোনা এলাকার ভাড়া বাড়িতেই তাকে গুলি করে পাষণ্ড স্বামী। নিহত রোজিনা আক্তার (২৮) কক্সবাজার পৌরসভার পূর্ব পাহাড়তলীস্থ কচ্ছপিয়া পুকুর এলাকার মোহাম্মদ শফির স্ত্রী ও পশ্চিম পাহাড়তলীস্থ হালিমাঘোনা এলাকার ভাড়াটিয়া মো. শফির মেয়ে। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। আর রোজিনা ছাড়াও শফির আরও দু'স্ত্রী রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।
Advertisement
রোজিনার বাবা মো. শফি জানান, গত ৬-৭ বছর পূর্বে রোজিনা এবং শফি পালিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের পর এক বছর পর্যন্ত তাদের সুখের সংসার ছিল। এ সময়ে তাদের কোলজুড়ে আসে এক কন্যা সন্তান। এরপর দিনযত যাচ্ছিল ততই তাদের সংসারের কারণে-অকারণে নানা কলহ লেগে থাকতো। এরই ভেতর তার স্বামী শফি আরও বিয়ে করে। এ নিয়ে কলহ চরমপর্যায়ে পৌঁছালে ২ বছর আগে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। কিন্তু ইতোমধ্যে শফি ও রোজিনার মাঝে আবার যোগাযোগ ঘটে। ফলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সম্প্রতি হালিমাঘোনা মসজিদের ইমাম তাদের পুনরায় বিয়ে পড়ান। এরপর শফি রোজিনার বাসায় যেত প্রায় সময়। শুক্রবার রাতেও শফি বাসায় গেলে কি কারণে তাদের মাঝে কলহ জন্ম নেয় জানা যায়নি। কিন্তু সকালে শফি রোজিনাকে পর পর কয়েকটি গুলি করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, এরপর রোজিনাকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে তাকে চমেক হাসপাতালে না নিয়ে কক্সবাজারস্থ কক্স ন্যাশনাল হাপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অপারেশন করে তার শরীরে বিদ্ধ গুলি বের করে সেখানেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোজিনা শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান।
কক্সবাজার পৌরসভার স্থানীয় (৭ নম্বর ওয়ার্ড) কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের পর মাসিক খোরাকসহ নানা বিষয় নিয়ে শফি-রোজিনার সালিশটি আমিই করেছিলাম। বাচ্চার মাসিক খরচটা নিয়মিত দেয়ার সিদ্ধান্তে সালিশে সমাধান হয়। এরপরও কেন কলহ হলো এবং কীভাবে শফি আবার রোজিনার বাসায় আসা-যাওয়া করল ঠিক জানা নেই। তবে শফি গুলি করেছে এ বিষয়টি জেনেছি। রোজিনারা অতিদরিদ্র।
Advertisement
কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্বামীর গুলিতে স্ত্রী নিহতের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে হালিমাপাড়ায় এসেছি। বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে তদারক করে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও হত্যাকারীকে ধরার চেষ্টা চলছে। মরদেহটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
সায়ীদ আলমগীর/এমএএস/এমএস