দেশজুড়ে

ঝকঝকে রেল গাড়িতে উঠার অপেক্ষা

বহুল প্রতীক্ষিত ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেললাইন প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রথম অবস্থায় চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এবং পরবর্তীতে ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার সময় নির্ধারণ করার কথা থাকলেও এখনো এর মাটি ভরাট কাজই শেষ হয়নি। অথচ এটি সরকারের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।এ প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্ত গীন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বর্ষায় মাটি ভরাটে সমস্যাসহ মাটি পরীক্ষার কাজে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে। ফলে আগামী জুনের মধ্যেও এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৪৫ থেকে ৫০% কাজ হয়েছে।রেলওয়ের পাকশী বিভাগের একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত) হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, বর্ষার কারণে মাটি ভরাট কাজ ব্যাহত হচ্ছে। মাটি ভরাটের পাশাপাশি মাঝগ্রাম, দাশুড়িয়া, টেবুনিয়া ও পাবনায় স্টেশন নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। ঢালারচর পর্যন্ত মোট ১১টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে।ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেললাইন প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ আসাদুজ্জামানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। সবকিছু এখনো জানার সুযোগ হয়নি।মাঝগ্রাম থেকে ঢালারচর পর্যন্ত ১০২টি ছোট ব্রিজ এবং ১১টি বড় ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে ঈশ্বরদীর মাঝগ্রাম থেকে পাবনা পর্যন্ত ৩৬টি ছোট ও ২টি বড় ব্রিজ এবং পাবনা থেকে ঢালারচর পর্যন্ত ৭৬টি ছোট ও ৯টি বড় ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম ফেজে পাঁচটি প্যাকেজে ১৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে মাটি ভরাট, রেললাইন স্থাপন, রেলক্রসিং গেট, পাবনা পর্যন্ত স্টেশন নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। গত ৪ মার্চ নিয়মিত মন্ত্রী সভার বৈঠকে ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেললাইন প্রকল্পে ৬৪ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বানের অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই টেন্ডার অনুযায়ী কাজ চলছে। ঈশ্বরদী-ঢালারচর ভায়া পাবনা রেলপথের কাজ ২০১০ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয়। এর আগে ওই বছরেই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি পাস করা হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৯৮২ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ঈশ্বরদীর অদূরে মাঝগ্রাম রেলস্টেশন থেকে পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালারচর পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার রেললাইন ও ১১টি রেলস্টেশন নির্মাণ করা হবে। ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনের সময় এক টেলিকনফারেন্সে পাবনায় রেলপথ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন এবং সেই অনুযায়ী প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। এ রেলপথ নির্মাণ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে উত্তরাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের আমুল পরিবর্তন হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে গুণগত পরিবর্তন ঘটবে। রেলপথে পণ্য পরিবহনে স্বল্প খরচের কারণে এ অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষি পণ্য সহজেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। মানুষজনও কম সময় ও খরচে যাতায়াত করতে পারবেন।পাবনা জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এ রেলপথ যা বাস্তবায়নের দিন গুণছেন তারা। তারা কবে চড়বেন নতুন ঝকঝকে রেল গাড়িতে সেই অপেক্ষায় রয়েছেন এ অঞ্চলের অগণিত মানুষ। এমজেড/পিআর

Advertisement