আন্তর্জাতিক

ভারতে মুসলিমদের ভোটাধিকার নিষিদ্ধের দাবি

ভারেতে মুসলমানদের ভোটাধিকার বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপত্র ‘বিশ্ব হিন্দু বার্তায়’ এমনই দাবি করেছেন নৃসিংহ প্রসাদ দে নামে এক ব্যক্তি।

Advertisement

কলকাতা টুয়েন্টি ফোর শনিবারের সংখ্যায় উল্লেখ করেছে বাংলা বিশ্ব হিন্দু বার্তার (৪৪তম বর্ষ, কার্তিক ১৪২৫, তৃতীয় সংখ্যা) ১৯-২২ নং পৃষ্ঠায় নৃসিংহ প্রসাদ দের লেখা ‘হিন্দু সমাজ ভাবনা’এর একটি অংশে মুসলিমদের ভোটাধিকার বাদ দেয়ার জন্য জোর সওয়াল করা হয়েছে৷

প্রবন্ধটিতে নৃসিংহ প্রসাদ লিখেছেন, ‘ভারতে বসবাসকারী মুসলমানদের সাথে কোনো বিরোধ নয়। তাদেরকে যে আশ্বাসে খণ্ডিত হিন্দুস্থানে থেকে যেতে দেওয়া হয়েছিল তেমনই থাকুক৷ কিন্তু হিন্দুস্থানে মুসলমানদের ভোটাধিকার কেন? শিক্ষা, জীবিকা, বাসস্থান, চিকিৎসা, ধর্মাচরণের সকল সুযোগ থাক। বাদ যাক ভোটাধিকার’।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘হিন্দুস্তান হিন্দুদের; দ্বিজাতি তত্ত্বের এই মর্মে দেশ ভাগ হয়েছিল৷ ফলে এখানে স্বাভাবিকভাবেই দেশকে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের সকল সুযোগ শুধুমাত্র হিন্দুদেরই থাকা উচিত৷ অন্যদের ভোটাধিকার এখনই বন্ধ করা যথার্থ বুদ্ধিমানের কাজ (যেটা ১৯৪৭ সাল থেকেই করা উচিৎ ছিল) এবং সেটাই হবে হিন্দুদের প্রতি, মানবতার প্রতি সুবিচার।’

Advertisement

অন্য এক জায়গায় তিনি লিখেছেন, ‘তারা আমাদেরই পূর্বপুরুষের জ্ঞাতি ও আত্মীয়৷ তারা একমাত্র হিন্দুত্বে ফিরে আসলেই পাক ভোটাধিকার’।

যদিও এই মতের সঙ্গে মোটেও একমত নন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাংলাসহ পূর্বাঞ্চলের প্রধান শচীন্দ্রনাথ সিংহ৷ তার বক্তব্য, ‘দেখুন এটি যেই লিখে থাকুক অবশ্যই ভুল৷ মুসলিমরা দেশের অংশ৷ সাংবিধানিকভাবে ওদের ভোটাধিকার স্বীকৃত৷ অবশ্যই তা সুরক্ষিত থাক৷ যারা অনুপ্রবেশকারী তাদের ভোটাধিকার রোধ করা হোক৷ যারা দেশ ভাগের আগের থেকে এদেশে আছেন তাদের নয়৷’

এদিকে শচীন্দ্রনাথ এই কথা বলার পরও প্রশ্ন উঠেছে তিনি বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এই মতের সমর্থক না হলে এরকম একটি লেখা তাদের মুখপত্র, বিশ্ব হিন্দু বার্তায় স্থান পেলে কীভাবে? কারণ এ নিয়ে ভুল সংশোধন কিংবা ক্ষমা চেয়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি।

তবে বিশষেজ্ঞদের মতে এরকম লেখালেখি করে খবরে থাকতে চাইছে বিশ্বহিন্দু পরিষদ৷ এটা তাদের ভুল, নাকি ইচ্ছাকৃত- তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিৎ৷ ভারতের সংবিধান বিরোধী এসব কথাবার্থা কোনো পক্ষেরই বলা উচিৎ না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷

Advertisement

এমএমজেড/এমএস