মাত্র ছয় বছর বয়সী একটি বাঘিনী। একজন দুজন নয়, একে একে ১৩ জনকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ। নানা কৌশলে তাকে ধরার চেষ্টা করা হলেও ব্যর্থ হয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা। অবশেষে শুক্রবার রাতে সেই বাঘিনীটিকে মেরে ফেলা হয়েছে। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
Advertisement
ভারতের মহারাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে গত দুই বছরে ১৩ জনকে হত্যা করেছে ওই বাঘিনী। পায়ের ছাপ মিলিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। ভারতের মধ্যাঞ্চলের এই প্রদেশে বাঘিনীটির মানুষ হত্যার ঘটনার পর পান্ধারকাওয়াদার পাহাড়ি এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বাঘিনীটিকে ধরার চেষ্টা করা হলেও শিকারের পর কৌশলে পালিয়ে যায় সেটি। গত আগস্টেই শুধুমাত্র এই একটি বাঘিনীর হামলায় অন্তত তিন জনের প্রাণহানির পর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা দেখা মাত্রই সেটিকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বন্যপ্রাণী বিষয়ক কর্মী এ আদেশের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে রিট করেন।
বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সুনিল লিমায় নিশ্চিত করেছেন, বাঘটিকে গতকাল রাত ১১টায় মেরে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, বাঘিনীটির চলাচলের পথে গাড়িতে করে বন্যপ্রাণী শিকারের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত একটি বন্দুক ও একটি আগ্নেয়াস্ত্র রাখা হয়েছিল। বাঘিনীটি যখনিই ওই পথ দিয়ে যায় ঠিক তখনই তাকে মেরে ফেলা হয়।
Advertisement
বনবিভাগের কর্মকর্তা এ কে মিশ্রা বলেন, অবশেষে গতকাল রাতে আমরা বাঘিনীটিকে মারতে সক্ষম হলাম। আমাদের একজন সহকর্মী বন্দুক দিয়ে সেটাকে মেরে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: একটি বাঘের জন্য হুলস্থুল কাণ্ড
প্রথম বাঘিনীটির কবলে পড়ে নিহত হন একজন বৃদ্ধা। মুখ থেতলানো অবস্থায় পিঠে অনেক আঘাতের চিহ্নসহ তাকে একটি তুলা ক্ষেতে পাওয়া যায়। এরপর এ ঘটনার শিকার হন একজন কৃষক; বামহাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে যায় বাঘটি।
গত আগস্টের মাঝামাঝি ভাগুজি কানাধারী নামের একজন মামুলী গবাদি পশুর রাখালের থেতলানো শরীর গ্রামের রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়। তিনি ছিলেন বাঘটির ১২তম শিকার।
Advertisement
ডিএনএ টেস্ট, ক্যামেরা ফাঁদ, বিভিন্ন চিহ্ন এবং পায়ের ছাপের মাধ্যমে দেখা যায়, একটি বাঘই ১৩ জনকে হত্যা করেছে। ৫ বছর বয়সী ওই বাঘ মানুষকে আক্রমণ করে তার মাংস খেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতগুলো মানুষকে একটি বাঘের আক্রমণ চালানো অত্যন্ত অস্বাভাবিক ঘটনা। বন্য-প্রাণী সংরক্ষণ নীতির একটি সাফল্য হিসেবে ভারতে বিপন্ন বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু প্রাণীগুলো দিন দিন মানবসতিতে আসার ফলে তা মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেন তারা।
এসএ/এমএস