রাজনীতি

যুক্তফ্রন্ট হ্যাপি : কাদের

ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ পজেটিভ হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তারা অত্যন্ত গঠনমূলক ও ইতিবাচক কথা বলেছেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে তারা হ্যাপি। সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এমন মন্তব্য করেন।

Advertisement

শুক্রবার রাত পৌনে ৮টায় বৈঠক শুরু হয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে। সংলাপ শেষে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমন মন্তব্য করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে তারা দাবি হিসেবে এনেছেন। সে দাবিগুলো আমরা মেনে নিয়েছি। সবতো আর মানা যায় না। এখানে সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে কিছু দাবি জড়িত। তবে তাদের ধন্যবাদ দিতে হবে যে সংবিধানে সংশোধন কিংবা পরিবর্তন করতে হবে এমন কোনো মেজর দাবি করেননি। আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে তারা সরকার পরিবর্তন কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে জোর কোন দাবি উত্থাপন করেনি।

আরও পড়ুন>> আমরা সন্তুষ্ট

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংলাপে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সবার বক্তব্য শুনেছেন। এখানে উভয়পক্ষ মিউচুয়াল হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একসুরে। তাদের একজন ছাড়া ২০ জনই কথা বলেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও মঈনুদ্দিন খান বক্তব্য দিয়েছেন।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী তাদের দেয়া দাবির অনেকগুলোই মেনে নিয়েছেন জানিয়ে কাদের বলেন, যেমন তাদের প্রথম দাবি নির্বাচনে সকলের জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সংসদ হয় ভেঙে দিতে হবে নয়তোবা নিস্ক্রিয় করতে হবে। আমাদের নেত্রী বলেছেন সংসদের শেষ সেশন হয়ে গেছে, তাই এটি নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। নির্বাচনের যখন শিডিউল ঘোষণা হবে আমাদের সবাইকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে।

তাদের দ্বিতীয় দফা দাবি পুরোটাই মেনে নেয়া হয়েছে। এছাড়াও তৃতীয় দফা দাবির আংশিক মেনে নেয়া হয়েছে। তা হলো নির্বাচনে সকল প্রকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার অথবা বর্তমান সরকারের নির্বাচন বিষয়ে সম্পূর্ণ ক্ষমতা সীমিত করার বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।

তিনি বলেন, সংলাপে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করার দাবি উত্থাপন করেছে যুক্তফ্রন্ট। এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সেনাবাহিনী নিয়ে অনেক বির্তক হয়েছে। সেনাবাহিনীর ভূমিকার জন্য সারাবিশ্বে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগ দিয়ে প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের দেশেও সংকটে দুর্যোগে তাদের অবদান অসামান্য। এই সেনাবাহিনীকে যেখানে সেখানে ব্যবহার না করাই ভালো। সেনাবাহিনী অবশ্যই নিয়োজিত হবে। তবে তা হলো তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে।

নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সঠিক হবে না যুক্তফ্রন্টের এমন দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে তা সংসদে পাশ হয়নি। এটা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত। রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশও জারি করেছেন। এখন নির্বাচন কমিশন এই সময়ের মধ্যে কতটা ইভিএম ব্যবহারে ভূমিকা রাখতে পারবে সেটা একবারে পরিষ্কার নয়। হয়তো সীমিত আকারে ব্যবহারের চিন্তা-ভাবনা নির্বাচন কমিশনের থাকতে পারে।

Advertisement

আরও পড়ুন>>মানবতা আজ ডুকরে কাঁদে

সংলাপে বিকল্প ধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বিকল্পধারার নেতা আবদুল মান্নান, শমসের মবিন চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, সহ-সভাপতি মাহমুদা চৌধুরী, মাহবুব আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক ও নির্বাহী সদস্য সাবেক এমপি মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী; সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা; বিএলডিপি সভাপতি নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া; ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান (এনডিপি) খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ইশা; বাংলাদেশ জনতা পার্টির সভাপতি শেখ আসাদুজ্জামান; জনদলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী; হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ইউনাইটেড মাইনরিটি ফ্রন্টের সভাপতি দীলিপ কুমার দাশ এবং লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন-আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্যাহ, আবদুল মতিন খসরু, মো.আব্দুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, আনিসুল হক, মাহাবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুস সোবহান গোলাপ, শ ম রেজাউল করিম, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, মইনুদ্দিন খান বাদল ও সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া।

এফএইচএস/এমআরএম