পোড়া রোগীর সুচিকিৎসায় ‘স্কিন ব্যাংক’ স্থাপনের পরিকল্পনা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। রাজধানীর চাঁনখারপুলে দুই একর জমির ওপর আধুনিক যে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে সেখানেই স্কিন ব্যাংকটি স্থাপিত হবে।দেশে একটি আধুনিক বার্ন ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার লক্ষ্যে সম্প্রতি ৮ সদস্যের সরকারি একটি প্রতিনিধি দল সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার দুটি আধুনিক হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন কমিটিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্থাপত্য অধিদফতরের কর্মকর্তা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ছিলেন। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শনকালে তারা ‘স্কিন ব্যাংক’ স্থাপনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন। দলপ্রধান ও বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের জাতীয় সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জাগো নিউজকে জানান, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা ‘স্কিন ব্যাংক’ স্থাপনের ব্যাপারে কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি বাংলাদেশে এসে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। ডা. সেন জানান- দেশে প্রতি বছর গড়ে ৬ লাখ নারী, পুরুষ ও শিশু বিভিন্নভাবে (বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, অগ্নিশিখা, রাসায়নিক ও গরম তরল পদার্থে ঝলসে) দগ্ধ হচ্ছে। ঢামেকের ১০০ শয্যার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে গড়ে ৩ শতাধিক রোগী ভর্তি হচ্ছে। তিনি জানান, অগ্নিদগ্ধ রোগীর শরীরের শতকরা ৫০ ভাগ পুড়ে গেলে তার সেই চামড়া আর কাজে লাগে না। ইনফেকশন এড়াতে ও রোগীর জীবন রক্ষায় তখন স্কিন গ্রাফটিং করতে হয়। ঢামেকে ভর্তি রোগীর অর্ধেক রোগীর স্কিন গ্রাফটিং প্রয়োজন হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে স্কিন ব্যাংক নেই বলে অনেক রোগীর স্কিন গ্রাফটিং দ্রুত করা সম্ভব হয়না। ঢামেকের প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ খন্দকার জাগো নিউজকে জানান, উন্নত বিশ্বে মৃতদেহ থেকে বিশেষ ধরনের মেশিনের মাধ্যমে স্কিন (চামড়া) সংগ্রহ করে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফ্রিজে রাখা হয়। পরে প্রয়োজন অনুসারে পোড়া রোগীর দেহে গ্রাফটিং করা হয়। প্রস্তাবিত বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্কিন ব্যাংকটি স্থাপিত হলে বিপুল সংখ্যক পোড়া রোগীর সুচিকিৎসা ও মৃত্যুরোধ করা সম্ভব হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।ডা. সামন্তলাল সেন জানান, ‘স্কিন ব্যাংক’ স্থাপন করতে হলে প্রথমে এ সংক্রান্ত অরগ্যান ট্রান্সপ্ল্যান্ট আইন প্রণয়ন করতে হবে। পাশাপাশি মৃতদেহ থেকে স্কিন সংগ্রহের লক্ষ্যে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, দেশে পোড়া রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তাই একটি ‘স্কিন ব্যাংক’ স্থাপন এখন সময়ের দাবি বলে উল্লেখ করেন তিনি। এমইউ/এসএইচএস/এআরএস/পিআর
Advertisement