জাতীয়

দেশে অন্ধ জনসংখ্যা ১৪ লাখ

দেশে অন্ধ জনসংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ, এর মধ্যে ৫ লাখের মতো কর্নিয়াজনিত অন্ধ। প্রতিবছর আরও যোগ হচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার অন্ধ মানুষ।

Advertisement

২ নভেম্বর জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবাবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাকিয়া সুলতানা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অন্ধত্ব বাংলাদেশের এক অন্যতম সমস্যা। একজন অন্ধ ব্যক্তি তার পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বোঝা স্বরূপ। সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি দেশে কর্নিয়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সরবরাহকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান। সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৪২টি কর্নিয়া সংগ্রহের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৩১ জন অন্ধ মানুষের চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে পেরেছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশের কর্নিয়াজনিত অন্ধত্ব দূর করতে ৬ হাজার বছর লাগবে।’

১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর সন্ধানী দেশে প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রম শুরু করে জানিয়ে জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘সন্ধানী ছাড়াও এ কাজে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, কোয়ান্টাম, বাঁধন, পুলিশ ব্লাডব্যাংকসহ আরও অনেক সংগঠন।’

Advertisement

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘সরকার অন্ধত্ব দূরীকরণে ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনেও উৎসাহিত করতে মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-২০১৮ প্রণয়ন করেছে। এর কারণে অঙ্গ ও চক্ষুদানে আর কোনো বাধা নেই। মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তির কোনো আইনানুগ উত্তরাধিকারের সম্মতিতে চক্ষু সংগ্রহ করা যাবে।’

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ লোক মুত্যুবরণ করে। এই মৃত্যুর ২ শতাংশ কর্নিয়া সংগ্রহ করতে পারলে আমরা বছরে ৪০ হাজার কর্নিয়া পেতে পারি। তাই আমরা ‘এ ন্যাশনাল প্রজেক্ট টু অ্যালেভিয়েট কর্নিয়াল ব্লাইন্ডেনেস ফ্রম বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তির পরিবারকে চক্ষুদানে উদ্বুদ্ধকরণ প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি। এছাড়াও আমরা সন্ধানী ৮০০ স্বেচ্ছাসেবীকে প্রশিক্ষণ দেব যারা মৃত ব্যক্তির পরিবারের কাছে গিয়ে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে কর্নিয়া দানের জন্য অনুরোধ করবে। এই কাজটি মোটেও সহজ নয়।’

‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস ২০১৮’ এ এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘দৃষ্টি ফেরায় চক্ষুদান/রক্তদানে বাঁচে প্রাণ।’

দিবস উপলক্ষে রাজধানীর শহীদ মিনার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল পর্যন্ত ‘সড়ক বান্ধব র্যালি’ হবে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘র্যালিতে এক সারিতে ফুটপাত দিয়ে ব্যানার, ফেস্টুনসহ মানুষ হেঁটে যাবে। র্যালিতে কিছু মানুষের চোখ বাঁধা অবস্থায় কাঁধে হাত দিয়ে এগিয়ে যাবে। এটা দিয়ে দেখানো হবে, একজন অন্ধ মানুষের পথচলা যে মানুষটির কাছে পৃথিবী শুধুই নিকষ কালো অন্ধকার। এদের চোখের দৃষ্টি ফেরাতে আমরা আহ্বান করব মৃত্যুর পর চোখদানের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য।’

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান কমিটির সভাপতি ডা. এ কে এম সালেক ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/জেএইচ/পিআর