আন্তর্জাতিক

লুকিয়ে স্কার্টের নিচের ছবি তোলা যেভাবে হলো দণ্ডনীয় অপরাধ

নারীর অজান্তে তার স্কার্টের নিচ থেকে ছবি তোলা বা ‘আপস্কার্টিং’-এর বিষয়টিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে নতুন আইন হচ্ছে যুক্তরাজ্যে। নতুই এই আইন লঙ্ঘনে কারাদণ্ড ভোগ করা ছাড়াও গুনতে হতে পারে আর্থিক জরিমানা।

Advertisement

জিনা মার্টিন নামে এক তরুণীর দীর্ঘ সংগ্রামের ফলে এই আইন প্রণয়নে অনেকটা বাধ্য হয়েছে ব্রিটিশ সরকার।

তবে জিনার এই সংগ্রাম কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না। অনলাইনে গালি-গালাজের পাশাপাশি ধর্ষণের হুমকিও পেয়েছেন তিনি। এক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছদ্মনাম নিতে হয় তাকে।

২৭ বছরের জিনা মার্টিনের লড়াই শুরু হয় লন্ডনের বিখ্যাত হাইড পার্কে একটি কনসার্টের সময় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে। উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের লিভারপুল শহরের মেয়ে জিনা তখন কনসার্টে গান শুনতে মগ্ন। সেই সুযোগে এক ব্যক্তি মোবাইলে তার স্কার্টের নিচের অংশের ছবি তোলে। বিষয়টি জিনার নজরে আসলে লোকটির হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে পুলিশকে দেখান তিনি। কিন্তু ফোন থেকে ছবিটি মুছে দিয়েই দায় সারেন পুলিশ।

Advertisement

তবে থেমে থাকেননি জিনা। ইংল্যান্ডে এই ‘আপস্কার্টিং’ আইনের চোখে অপরাধ নয়- জানার পর তার মনে হয় কিছু একটা করা দরকার। শিক্ষিত, প্রগতিশীল পরিবারের নারীবাদী মেয়ে জিনা অনলাইনে একটি স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চালিয়ে প্রায় এক লক্ষ সই সংগ্রহ করেন।

কিন্তু তার পরিবার, আইনজীবী ও বন্ধুদের সহায়তায় কঠিন সময় পেরোন তিনি। একটুও দমে না গিয়ে ‘আপস্কার্টিং’-এর শিকার অন্য নারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই লড়াইয়ে প্রাথমিক ধাক্কা আসে যখন সাংসদ ক্রিস্টোফার চোপ জিনার প্রস্তাবিত আইন নাকচ করে দেন। তবে দিন দিন জিনার উদ্যোগের সমর্থক বাড়তে থাকায় আইন প্রণয়নের কথা ভাবতে বাধ্য হয় টেরেসা মে’র সরকার।

জিনার এই দীর্ঘ সংগ্রামের ফলে ‘আপস্কার্টিং’ যা এতদিন ছিল আইনের আওতার বাইরে, বর্তমানে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আলোচনার ঝড় তুলছে।

এই সাফল্যের কৃতিত্ব পৃথিবীজুড়ে চলমান ‘মি টু’ আন্দোলনকেও দিয়েছেন জিনা। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই আমার লড়াই অনেকটা সহজ হয়ে গেল। অনেকেই আমাকে ম্যাসেজ দিয়ে তাদের সঙ্গে ঘটা এমন ঘটনার কথা জানান। অবশেষে আমি তাদের উপযুক্ত লড়াইয়ের পথ বাতলাতে পারবো। এই আইন তাদেরকেও আমার মতো কিছুটা স্বস্তি দেবে বলে মনে করি।’

Advertisement

এমবিআর/আরআইপি