বিশ্বকাপ ফুটবল যে তার জাদু এবং মোহ-মায়া দিয়ে এককভাবে বিশ্বজনীন হয়ে উঠেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অলিম্পিকের চেয়ে অনেকেই একে এককভাবে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ নামেও অভিহিত করে থাকে। তবে ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা কিন্তু বিশ্বকাপকে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ রাখতে রাজি নয়। তারা বিশ্বকাপকে আরও বড় পরিসরে, আর অনেক বেশি ছড়িয়ে দিতে বদ্ধ পরিকর।
Advertisement
সে হিসেবে চলতি বছরের শুরুতেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ২০২৬ সাল থেকেই বিশ্বকাপে বাড়ানো হবে আরও ১৬টি দল। অর্থ্যাৎ ২০২৬ সাল থেকে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ৪৮ দল নিয়ে। কিন্তু রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকেই আলোচনার শুরু, ২০২৬ সালে পারলে কেন ২০২২ সালে ৪৮ দলের বিশ্বকাপ আয়োজন সম্ভব নয়?
২০২২ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার কিন্তু সব সময়ই বলে আসছে, তারা ৪৮ দলের বিশ্বকাপ আয়োজন করতেও প্রস্তুত। শুধু তারা ফিফার কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার অপেক্ষায়।
এবার সেই সুবজ সঙ্কেতটাই ফিফার কাছ থেকে পেতে যাচ্ছে কাতার। তবে এ ক্ষেত্রে ফিফা একটু ভিন্নভাবে চিন্তা-ভাবনা করছে। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো আজ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা ২০২২ সালেই ৪৮ দলের বিশ্বকাপ আয়োজন করতে ইচ্ছুক। তবে সেটা সম্ভব কি না এখনও তা পর্যবেক্ষণের বাকি রয়েছে।
Advertisement
ইনফ্যান্তিনো ইঙ্গিত দিয়েছেন, শুধু কাতার নয়, পাশাপাশি আরও একটা-দুটা দেশ প্রস্তুত থাকলে ২০২২ সালেই ৪৮ দলের বিশ্বকাপ আয়োজন করে ফেলবে ফিফা। আশ-পাশে আরও একটি-দুটি দেশ খোঁজার কারণ হচ্ছে, কাতার হচ্ছে একটি ছোট দেশ। অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালী হলেও ছোট একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ না রেখে আশ-পাশে দু’একটি দেশে বিশ্বকাপের আয়োজন ছড়িয়ে দিতে পারলে সেটাই বরং ভালো হয়।
২০২৬ বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডা। তিনটিই অনেক বড় বড় দেশ। তবুও ৪৮ দলের বিশ্বকাপ এককভাবে আয়োজন করার কোনো সাহস তাদের কেউ করেনি। ফিফাও এককভাবে কাতারের ওপর এত বড় বোঝা চাপিয়ে দিতে চায় না।
এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) বার্ষিক সভায় বক্তব্য দিতে এসে ইনফ্যান্তিনো বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০২৬ সাল থেকে বিশ্বকাপের দল ৩২ থেকে ৪৮টিতে উন্নীত করবো। তবে, ২০২২ সালে এটা সম্ভব কি না সে কথাও উঠছে। এটা কি সম্ভব? আমরা নিজেরাই সেই সম্ভাবনা খুঁজছি। সম্ভব হলে, ২০২২ সালেই কেন হবে না ৪৮ দলের বিশ্বকাপ?’
৪৮ দলের বিশ্বকাপ হলে এশিয়া থেকে কতটি দল বাড়বে? সে প্রশ্নের উত্তরও দিয়ে গেছেন ইনফ্যান্তিনো। তিনি জানিয়েছেন, এশিয়া থেকে ৪.৫টি দলের পরিবর্তে ৪৮ দলের বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে ৮.৫টি দল। অর্থ্যাৎ, সরাসরি ৮টি এবং একটির সুযোগ থাকবে প্লে-অফের মাধ্যমে খেলার।
Advertisement
২০২২ সালে বড় আয়েজন করা সম্ভব কি না সে প্রসঙ্গে আবারও ফিরে এসে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখবো, ২০২২ সালে এটা সম্ভব কি না। যদি তাদের সাধ্য থাকে, তাহলে এ নিয়ে আমরা কাতারি বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলবো। এছাড়া একই অঞ্চলে আমরা আরও কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গেও আলোচনা করবো এবং আমরা আশাবাদী এটা সম্ভব।’
সম্ভব না হলেও ইনফ্যান্তিনো জানিয়েছেন, তার সর্বশেষ সময় পর্যন্ত চেষ্টা করে যাবেন। কারণ, ফিফা সব সময়ই ভালো কিছুর জন্য চেষ্টা করে থাকে।
আইএইচএস/এমএস