পাকিস্তানে ব্ল্যাসফেমির দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খ্রিস্টান এক নারীর সাজা বাতিল করে রায় ঘোষণা করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ব্যাপক আলোচিত এই মামলাকে কেন্দ্র করে দেশটির কট্টরপন্থীরা এর আগে তীব্র আন্দোলন করেছিল।
Advertisement
বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসিয়া বিবি নামের ওই খ্রিস্টান নারীর বিরুদ্ধে ২০১০ সালে অভিযোগ গঠন করা হয়। ওই সময় বলা হয়, প্রতিবেশিদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার সময় তিনি নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে অবমাননা করেছেন।
তবে শুরু থেকে তার বিরুদ্ধে অানা এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন আসিয়া বিবি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত আট বছর ধরে কারাবন্দি ছিলেন তিনি। তবে আদালতের ঐতিহাসিক এ রায় ঘোষণার পর ইতোমধ্যে দেশটির কট্টরপন্থীরা সহিংস প্রতিবাদ শুরু করেছেন। যারা আসিয়ার বিবির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
আরও পড়ুন : শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে ১৮ ধাপ উন্নতি বাংলাদেশের
Advertisement
বুধবার রায় ঘোষণার পর পাকিস্তানের করাচি, লাহোর, পেশওয়ার ও মুলতানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ব্ল্যাসফেমি আইনের সমর্থকরা। রায় ঘোষণার আগে ইসলামাদের অবস্থিত দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
মৃত্যুদণ্ড থেকে আসিয়া বিবিকে খালাসের রায় ঘোষণার সময় দেশটির প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসারম বলেন, অন্য কোনো মামলায় যদি তার সংশ্লিষ্টতা না থাকে তাহলে শিগগিরই লাহোরের শেইকুপুরার কারাগার থেকে এখন আসিয়া বিবি অবাধে বেরিয়ে যেতে পারবেন।
তবে রায় ঘোষণার সময় আদালতে ছিলেন না আসিয়া। মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাসের রায় শোনার পর কারাবন্দি আসিয়া বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। টেলিফোনে বার্তাসংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিয়া বলেন, রায় শোনার পর আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। আমি কি এখন বের হতে পারবো? তারা কি আদৌ আমাকে বেরিয়ে যেতে দেবে?
আরও পড়ুন : সরিয়ে দেয়া হলো লায়ন এয়ারের পরিচালককে
Advertisement
আসিয়া বিবির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ
২০০৯ সালের জুনে আসিয়া বিবি একদল নারীর সঙ্গে কৃষি জমিতে কাজ করতেন। এসময় এক বালতি পানি নিয়ে দলের অন্য নারীদের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। আসিয়া বিবি বালতি থেকে এক গ্লাস পানি নেন। এনিয়ে দলের অন্য নারীরা তার সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারা বলেন, আসিয়া বিবি মুসলিম নন, সেজন্য তিনি মুসলিমদের বালতির পানিতে গ্লাস ডুবিয়ে পানি তুলতে পারেন না।
আরও পড়ুন : ফের আটলান্টিকে ভাসবে টাইটানিক!
বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে তিনটি অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। ওই নারীরা আসিয়া বিবিকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের দাবি জানান।
নিজ বাড়িতে মারধরের শিকার হন আসিয়া বিবি। ব্লাসফেমির দায়ে তাকে মারপিট করেন অভিযোগকারীরা। পরে তদন্তের পর আসিয়া বিবিকে গ্রেফতার করে পাকিস্তান পুলিশ।
সূত্র : বিবিসি, এএফপি।
এসআইএস/জেআইএম