তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে সৌদি কনস্যুলেটে বর্বর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। কিন্তু তার এই হত্যাকাণ্ড এখনও রহস্যই রয়ে গেছে। এমনকি এখনও পর্যন্ত খাশোগরি মরদেহও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
Advertisement
খাশোগির হত্যাকাণ্ডে প্রথম থেকেই সৌদির দিকে আঙুল তুলেছে তুরস্ক। খাশোগিকে হত্যা করে তার লাশ টুকরো টুকরো করে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে তুর্কি কর্মকর্তারা দাবি করেন। প্রথমদিকে, তুরস্কের এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও পরে ওই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে নেয় সৌদি।
দেশটির তরফ থেকে জানানো হয় যে, কনস্যুলেটের ভেতরেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন খাশোগি। পরে তিনি নিহত হন। খাশোগির লাশ কোথায় আছে সে বিষয়ে সত্য প্রকাশ করতে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছে দাবি জানিয়েছেন খাশোগির বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিস।
লন্ডনে শ্রোতাদের সামনে আবেগতাড়িত হয়ে হাতিস চেঙ্গিস বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে, সৌদি জানে তার (খাশোগির) মরদেহ কোথায় আছে। আমার দাবির পক্ষে তাদের উত্তর দিতে হবে। এটা শুধুমাত্র একজন বাগদত্তার দাবি নয়, এটা একজন মানুষের এবং সেই সঙ্গে ধর্মীয় দাবিও।
Advertisement
গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন জামাল খাশোগি। সে সময় তিনি হাতিস চেঙ্গিসকে কনস্যুলেটের বাইরে রেখে গিয়েছিলেন। হাতিস ঘণ্টার পর ঘণ্টার সেখানে খাশোগির ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও খাশোগি আর ফিরে আসেননি। এরপর থেকেই তার আর কোন হদিস পাওয়া যায়নি।
খাশোগির হত্যাকাণ্ড যেন কোনোভাবেই ধামাচাপা দেয়া না যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হাতিস চেঙ্গিস।
তুরস্কে বাইরে প্রথমবারের মতো নিজের মত প্রকাশ করলেন খাশোগির প্রেমিকা হাতিস। তিনি বলেন, আমি ন্যায়বিচার চাই। যারা আমার ভালোবাসার মানুষটিকে হত্যা করেছেন শুধু তারাই নয় বরং যারা এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে জড়িত ছিল এবং তাকে হত্যার আদেশ দিয়েছিল তাদেরও বিচার চাই আমি। এটা শুধু আমার প্রশ্ন নয়, এটা লাখ লাখ মানুষের প্রশ্ন। হাতিস বলেন, তার প্রেমিকের মৃত্যু তার জীবনকে শূন্য করে দিয়েছে।
সৌদি আরবের কঠোর সমালোচক ছিলেন জামাল খাশোগি। গত বছর সৌদি ছেড়ে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসন নেন তিনি। চারমাস আগেই হাতিস চেঙ্গিসের সঙ্গে আংটি বদল করেন খাশোগি। খুব শিগগিরই তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
Advertisement
হাতিস বলেন, যদি আমি জানতাম যে, সেখানে কি ঘটবে তাহলে আমি নিজেও কনস্যুলেটে প্রবেশ করতাম। আমি যদি জানতাম যে, সেখানে রক্তপিপাসু এবং খারাপ লোকজন আমার জামালকে হত্যার জন্য অপেক্ষা করছে তাহলে আমি তাকে কনস্যুলেটের ভেতরে প্রবেশ না করার জন্য সব কিছুই করতাম।
টিটিএন/জেআইএম