নির্বাচনের আগে বড় দুই সিটি কর্পোরেশনের (ঢাকা উত্তর ও গাজীপুর) উন্নয়নে বড় অঙ্কের বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। উন্নয়ন কাজে দেয়া হচ্ছে ২২শ’ কোটি টাকা। এ অর্থ দিয়ে দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকার বিভিন্ন ক্যাটাগরির সড়ক নির্মাণ, বিদ্যমান নর্দমা সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
Advertisement
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) জন্য আলাদা আলাদা প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। এতে নাগরিক সেবা বাড়ানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অনুমোদন পেলে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করবে ডিএনসিসি ও জিসিসি।
প্রকল্প দুটি অনুমোদনের জন্য আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তোলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে-বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, জিসিসি জন্য নেয়া ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১-৫ নং জোনের অভ্যন্তরীন রাস্তা নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৫১০ কোটি টাকা।
Advertisement
জিসিসি সূত্র জানায়, ৩২৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন দেশের সবচেয়ে বড় সিটি কর্পোরেশন। জিসিসির প্রায় ২৪৪ বর্গকিলোমিটারই গ্রামীণ এলাকা। অনেক গার্মেন্টস ও ওষুধ শিল্পসহ বিভিন্ন খাতের শিল্প কারখানা ও সরকারি-বেসরকারি অনেক স্থাপনা রয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় অবকাঠামো অপ্রতুল। বিশেষ করে প্রয়োজনের তুলনায় সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে, সড়কও অপ্রশস্ত।
পুরনো এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত রফতানিমুখী যান চলাচল করায় সড়কগুলো বেশ ক্ষতবিক্ষত, এতে বর্ষায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। তাই সড়কগুলো প্রশস্ত করা ও জলাবদ্ধতা নিরসনে আলোচ্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
জিসিসির প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- ১৭৪ কিলোমিটার রাস্তা বিটুমিন ঢালাই ও ১০১ কিলোমিটার রাস্তা আরসিসি ঢালাই, ১৩৫ কিলোমিটার ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ ইত্যাদি।
অপরদিকে ডিএনসিসির জন্য নেয়া ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, নর্দমা, ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়নসহ সড়ক নিরাপত্তা’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৬৯৪ কোটি টাকা।
Advertisement
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, গত কয়েক বছরের নগরায়নের ফলে ঢাকা শহরে আবাসিক, বাণিজ্যিক প্রশাসনিক এবং শিল্প কারখানার জন্য বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এসব উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আনুপাতিক হারে সড়ক অবকাঠামো প্রয়োজন থাকলেও সে অনুপাতে বাড়েনি। ফলে বর্ধিত জনসংখ্যার যাতায়াত ও যান চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যমান অপ্রতুল সড়কও অনেকাংশে ভাঙা ও অপ্রশস্ত।
এ ছাড়া বর্ষণে ডিএনসিসির বিভিন্ন রাস্তা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপর্যাপ্ত ড্রেজেন সুবিধার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে নতুন সড়ক নির্মাণ করা হলেও তা টেকশই হচ্ছে না। জলাবদ্ধতায় পথচারী ও যান চলাচলেও ভোগান্তি পোহতে হয়। এ অবস্থায় ডিএনসিসির রাস্তা, ফুটপাত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার, নির্মাণ, প্রশস্ত করার জন্য প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে।
ডিনসিসির প্রকল্পের আওতায় মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- ৯১.৫১ কিলোমিটার রাস্তা, ১২২ কিলোমিটার ড্রেন, ৮৩ কিলোমিটার ফুটপাত এবং রাস্তায় ১০ কিলেমিটার মিডিয়ান নির্মাণ ও উন্নয়ন।
প্রকল্প দুটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরী কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, এ প্রকল্প অনুমোদন হলে ঢাকা উত্তর ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার সড়কের নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়ন হবে। এতে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে সড়কের জলাবদ্ধতা নিরসন ও সাধারণ মানুষের চলাচলের পথও সুগম হবে। এ জন্য একনেকে অনুমোদনের জন্য সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে।
এমএ/আরএস/জেআইএম