বিনোদন

অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে এই ছবিতে কাজ করেছি : সুস্মি রহমান

মডেল হিসেবে শোবিজে পথচলা শুরু করেছিলেন সুস্মি রহমান। গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে ২০০৯ সাল থেকেই। দীর্ঘদিনের পথচলায় নিজেকে তৈরি করেছেন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য। ২ নভেম্বর মুক্তি পাচ্ছে তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘আসমানী’। নতুন নির্মাতা এম এ সাখাওয়াত হোসেন পরিচালিত ছবিটিতে সুস্মির নায়ক বাপ্পী চৌধুরী।

Advertisement

প্রথম পরীক্ষার ফল কতটা ভালো হবে সে নিয়ে টেনশনে ভুগছেন। তবে সুস্মির প্রত্যাশা গল্প ও অভিনয় প্রধান ছবিটি দর্শক গ্রহণ করবেন। প্রথম সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন সুস্মি রহমান। জানান, বড় পর্দায় নিজের ভবিষ্যত ভাবনা সম্পর্কেও।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন লিমন আহমেদ।

সুস্মি রহমান

জাগো নিউজ : অবশেষে ২ নভেম্বর চূড়ান্ত হয়েছে আপনার প্রথম ছবি ‘আসমানী’র মুক্তির তারিখ। অভিষেকের অপেক্ষায় সময়টা কেমন কাটছে?

Advertisement

সুস্মি : সত্যি বলতে খুবই টেনশন হচ্ছে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে সিনেমার জগতে এসেছি। ভবিষ্যতে নিজেকে একজন অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সেই স্বপ্নের প্রথম পরীক্ষা ২ তারিখ। দর্শক ছবিটি কীভাবে গ্রহণ করবেন সেটাই ভাবছি বার বার। ছবি মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। দিন যত ঘুনিয়ে আসছে ততই কেমন জানি মনে হচ্ছে।

জাগো নিউজ : ছবিটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কেমন?

সুস্মি : আমি অনেক আশাবাদী ‘আসমানী’ নিয়ে। যারা গল্প প্রধান চলচ্চিত্র পছন্দ করেন, ভালো অভিনয় দেখতে চান, নির্মাণের মুন্সিয়ানা দেখতে চান তাদের জন্য ভালো একটি ছবি হবে এটি। খুব যত্ন সহকারে নির্মাতা ছবিটি তৈরি করেছেন।

বাপ্পী চৌধুরী-সুস্মি রহমান

জাগো নিউজ : চলচ্চিত্রে দর্শক টানতে ‘তারকা’ খ্যাতি বা জনপ্রিয় মুখ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেক্ষেত্রে নায়ক বাপ্পী চৌধুরীই এই ছবির বড় বিজ্ঞাপন। এ ছাড়া ‘আসমানী’ ছবির নায়িকা ও পরিচালক নতুন। কেন ছবিটি দেখতে হলে আসবেন দর্শক?

Advertisement

সুস্মি : এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দর্শক পরিচিত মুখের টানেই হয়তো হলে আসে। এটা সর্বাধিক মত হতে পারে। তবে ভালো গল্প, ভালো নির্মাণের জন্যও দর্শক হলে আসেন। আর চলচ্চিত্রে এখন নতুনদের জয়জয়কার। অনেক উদাহরণ আছে। সম্প্রতি ‘দেবী’র কথা বলা যায়। ‘দেবী’ সিনেমার পরিচালক নতুন, প্রযোজক হিসেবে জয়া নতুন, অভিনেত্রী শবনম ফারিয়াও নতুন ছিলেন। তারা সবাই কিন্তু সফল হয়েছেন। দর্শক তাদের গ্রহণ করেছে। এটা হয়েছে ভালো প্রচারের জন্য।

এ ছাড়া দর্শকরা জানতে পেরেছেন যে, ‘দেবী’ ছবিটি ভালো, দেখার মতো। আবার মুক্তির পর দর্শকও এর প্রচার করছেন। নিজে দেখার পর অন্যকে দেখতে উৎসাহিত করছেন। আমরাও ‘আসমানী’ নিয়ে প্রচার করছি। দর্শককে জানানোর চেষ্টা করছি একটি ভালো সিনেমা হিসেবে মুক্তি পাচ্ছে ‘আসমানী’।

সুস্মি রহমান

ছবিটির জন্য নায়ক বাপ্পী চৌধুরীর উপস্থিতি ইতিবাচক। তার অনেক দর্শক আছে। পাশাপাশি এখানে শতাব্দী ওয়াদুদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, অরুণা বিশ্বাস, শম্পা রেজা, এস এম মহসিনের মতো জনপ্রিয় শিল্পীরাও কাজ করেছেন। ছবিতে ভালো কিছু গান আছে। হাসি, কান্না, জীবনের নানা বোধ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে উপভোগ্য বিনোদনের মোড়কে। আমি আশাবাদী নতুন নায়িকা, নতুন পরিচালক ও প্রযোজক নিয়েও সফল হবে ‘আসমানী’।

জাগো নিউজ : একজন নবীন হিসেবে নায়ক বাপ্পীর বিপরীতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন হলো?

সুস্মি : এক কথায় অসাধারণ। বাপ্পী চৌধুরী অনেক সফল ছবির নায়ক। তার বিপরীতে অভিষেক হতে পারাটা আনন্দের। তিনি অনেক ডিয়ার মাইন্ড টাইপের মানুষ। এই ছবির প্রথম শুটিং ছিল একটি রোমান্টিক গানের। প্রথমদিনই বেশ সহজ ছিলাম। বাপ্পী সেই পরিবেশটা তৈরি করেছিলেন। সুন্দর মনের সহযোগী প্রবণ নায়ক বাপ্পী। চেষ্টা করেছি আমরা ভালো অভিনয়ের। আমাদের জুটির রসায়ন দর্শকের মনে দাগ কাটলেই সেই প্রচেষ্টা সফল হবে।

জাগো নিউজ : ‘আসমানী’ ছবিতে আপনার চরিত্রটি কেমন?

সুস্মি : এই ছবিতে বেশকিছু গল্পের উপস্থাপন করেছেন নির্মাতা। দর্শক এখানে আমাকে পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের লেখা ‘আসমানী’ কবিতা অবলম্বনে দেখতে পাবেন। আবার ষাট দশকের একটি চরিত্র আছে, একটি পতিতা চরিত্রও আছে। মোট চারটি চরিত্রে হাজির হবো এই ছবিতে। অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল নিজের চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তুলতে। আমি সত্যিই আনন্দিত এ কারণে যে, ক্যারিয়ারের প্রথম ছবিতেই অভিনয় করার যথেষ্ট জায়গা পেয়েছি। ফলে নিজেকে বিকশিত করার ভালো সুযোগ ছিল। চেষ্টা করেছি নির্মাতা যেভাবে চেয়েছেন সেভাবে অভিনয় করার।

জাগো নিউজ : চলচ্চিত্রে এখন নানা সঙ্কট। এই সময়ে চলচ্চিত্রের নিয়মিতরা অনেকেই আড়ালে চলে যাচ্ছেন। নতুনরাও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। তার ভিড়ে আপনার আগমন। টিকে থাকার প্রশ্নটা কিন্তু এসেই যায়...

সুস্মি : টিকে থাকার ব্যাপারটি আসলে ভাগ্য আর ভবিষ্যতের ওপর। মানুষ কেবল চেষ্টা করে যেতে পারে। আমিও চেষ্টা করব। আসলে যেখানে সঙ্কট বেশি সেখানে সমাধানেরও অনেক পথ খোলা থাকে। সেটাকে বাছাই করার কৌশলটা জানতে হয়। নিশ্চয়ই আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি শিগগিরই সেই কৌশলের পথ খুঁজে পাবে। দিনে দিনে কিন্তু অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। গেল কয়েক বছরে অনেক হিট ছবি মুক্তি পেয়েছে। সামনে আরও বাড়বে। তাই আমি হতাশ নই।

সুস্মি রহমান

কারণ, এরই মধ্যে অনেক ছবির প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু প্রথম ছবিটির অগ্নিপরীক্ষার স্বাদ না নিয়ে নতুন কোনো ছবিতে জড়াতে চাইনি। ‘আসমানী’ মুক্তির পর বেশ কিছু চমক নিয়ে হাজির হব। নিজেকে সিনেমায় নিয়মিত করতে চাই। নায়িকা হবার চেয়ে ভবিষ্যতে একজন অভিনয়শিল্পী হওয়াই বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। মূলকথা হলো হারিয়ে যাবো বলে অভিনয়ে আসিনি।

জাগো নিউজ : অনেক ছবির প্রস্তাবের কথা বলছিলেন। ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে প্রাধান্য দেন?

সুস্মি : আমার কাছে ভালো ছবির মূল শর্ত হলো ভালো গল্প। মজবুত চিত্রনাট্য ও সংলাপই একটি ছবির সাফল্যের নৈপথ্য নায়ক। তারপর আমি নিজের চরিত্রকে প্রাধান্য দেব। এরপর ভাববো কার পরিচালনায় কাজ করছি, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বা বাজেট, আমার সহশিল্পী কারা থাকছেন-এই বিষয়গুলো।

জাগো নিউজ : এখন পর্যন্ত কয়টি হলে ছবির মুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে?

সুস্মি : আমি নিশ্চিত হয়েছি প্রথম সপ্তাহে পঞ্চাশটিরও বেশি হলে ছবিটি মুক্তি পাবে।

জাগো নিউজ : ঢাকাই সিনেমার ইন্ডাস্ট্রিতে নবাগতা সুস্মি রহমানকে স্বাগতম...

সুস্মি : আপনাকে ধন্যবাদ। জাগো নিউজের মাধ্যমে সবার কাছে দোয়া চাই। দর্শকদের বলবো, হলে গিয়ে বাংলা সিনেমা দেখুন, ২ নভেম্বর থেকে ‘আসমানী’ দেখুন। দর্শক বেশি বেশি আসলে সিনেমা সফল হবে, প্রযোজক বাঁচবে। বাড়বে সিনেমার সংখ্যা, মানও। এলএ/এমআরএম/আরআইপি