জাতীয়

ঢাকায় ইলিশের ‘ওপেন সিক্রেট’ গল্প

টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর রোববার (২৮ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে দেশে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছে সরকার। তবে আগামী ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে জাটকা (ছোট ইলিশ) মৌসুম। ওই আট মাস জাটকা ধরা বন্ধ থাকবে।

Advertisement

এদিকে ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজধানীর পাইকারী ও খুচরা বাজারে বিক্রি হওয়া শুরু হয়েছে। এসব ইলিশের প্রত্যেকটির পেটই ডিমভর্তি। ওজন ৬০০ থেকে ৮৫০ গ্রামের মধ্যে।

বিক্রেতাদের দাবি এসব মাছ সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ধরা হয়েছে। তবে বাস্তবতা সে কথা বলে না। রাত ১২টায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ধরা ইলিশ কোনোভাবেই ভোর ৫টায় বরিশাল কিংবা চাঁদপুর থেকে রাজধানীর আড়তে পৌঁছানো সম্ভব না।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী আড়তের সামনের রাস্তায় আবুল কালাম নামে এক পাইকারী মাছ বিক্রেতা এ প্রতিবেদকের কাছে ৬/৭ শ’ গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি ইলিশের দাম চান ৫শ’ টাকা। অপর এক বিক্রেতা প্রায় ৮শ’ গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি ইলিশের দাম সাড়ে ৫শ’ টাকা বলেন। নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাম দিয়া কী করবেন, ইলিশ নিতে চাইলে নেন।

Advertisement

ওই বিক্রেতার কাছে এসব মাছ কবে ধরা হয়েছে জানতে চাইলে বলেন গত রাতেই চাঁদপুর থেকে। এ সময় তার কাছে রাত ১২টার পর মাছ ধরা শুরু করে ভোর পাঁচটায় ঢাকা পৌঁছানো সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

একই স্থানে অপর এক বিক্রেতাকে তার মাছ কোন এলাকা থেকে এসেছে জানতে চাইলে বলেন বরিশাল থেকে। তাকেও রাত ১২টার পর মাছ ধরা শুরু করে ভোর পাঁচটায় ঢাকা পৌঁছানো সম্ভব কিনা প্রশ্ন করা হলে চুপ থাকেন তিনি।

এ সময় মাঝবয়সী একজন বলেন, সবই তো বোঝেন, শুধু শুধু আমাদের প্রশ্ন করেন কেন?

জানা গেছে রোববার মধ্যরাতে ইলিশ ধরার সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগেই দুপুরের পর থেকে দেশের বিভিন্ন নদী ও সাগর মোহনায় মাছ ধরা শুরু করেন জেলেরা। অনেক স্থানে সকাল থেকেই মাছ ধরা শুরু হয়।

Advertisement

এর আগে ইলিশ রক্ষায় প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রের সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা ও বিক্রির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। ১৯৮৫ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণ বিধি (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিস রুলস, ১৯৮৫) অনুযায়ী নিষিদ্ধের এ সময় নির্ধারণ করা হয়।

এমএমজেড/জেআইএম