রাজনীতি

নির্বাচন কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলছেন

নির্বাচন কমিশন কতিপয় আত্মবিক্রয় করা লোকজনদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, এরা সমস্ত শক্তি দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার চিরদিনের জন্য হরণ করে নিতে শেখ হাসিনার মনোবাঞ্ছা পূরণে নিরন্তর কাজ করছে।

Advertisement

নির্বাচন কমিশনারদের সমালোচনা করে রিজভী বলন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার খুলনায় বললেন, সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার হবে। ইসি সচিব চট্টগ্রামে বললেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ৮৪ হাজার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনবে নির্বাচন কমিশন। এগুলো নাকি শহর এলাকায় ব্যবহার করা হবে। রংপুরে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বললেন, ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না-তা এখনও অনিশ্চিত। একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করার জন্য ভোটারদেরকে গোলকধাঁধার মধ্যে ফেলতে কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা এ সমস্ত বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলছেন।’

রোববার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘ইভিএম-এর নামে মহা জালিয়াতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তারা। নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীনদের কিছু লোকের পকেট ভারী করার জন্য সারা দুনিয়ায় ধিকৃত ও বিতর্কিত ইভিএম মেশিন ৩৮২৫ কোটি টাকায় কেনা হবে।’

Advertisement

সাবেক এই ছাত্রনেতার ভাষ্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় কমিশনার ভোটারবিহীন সরকারের একনিষ্ঠ সেবক বলেই এদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক ও সামাজিক সংগঠন, নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার নিয়ে বিরোধীতা সত্ত্বেও সেই ইভিএম পদ্ধতি নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। সীমিত আকারের কথা বলা হলেও আরপিও সংশোধন করে তারা ব্যাপকভাবেই আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করবে।

রিজভীর আহমেদ বলেন, ভোটারবিহীন সরকারের প্রধান একতরফা নির্বাচন করতে সব অস্ত্র ব্যবহার করছেন, যাতে তার ক্ষমতায় থাকাটা নিষ্কণ্টক হয়। এই কারণে তার আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন দিয়ে জালিয়াতির বাক্স ইভিএম চালু করতে চাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র নৌকার পক্ষে ‘ডিজিটাল ভোট-ডাকাতি’ করতেই এই ইভিএম ব্যবহারের তোড়জোড়। সকলের মত অগ্রাহ্য করে নির্বাচন কমিশনের একতরফাভাবে ইভিএম চালু ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার শামিল।’

২৮ অক্টোবর প্রসঙ্গে বিএনপির এই মুখপাত্র বলন, ‘২০০৬ সালের এইদিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী রাজনৈতিক সহিংসতায় বেশ কয়েকজন নিহত হন। শেখ হাসিনার নির্দেশে লগি-বৈঠা দিয়ে পাশবিক প্রহার, গুলি আর ইট-পাটকেলের আঘাতে রাজধানীর পল্টন এলাকায় ছয়জনকে হত্যা করে মরদেহের ওপর নৃত্য করা হয়। ২৮ অক্টোবরের সেই মৃত্যু-বিভীষিকা জনগণ এখনও ভুলে যায়নি।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী সন্ত্রাসের ছোবলে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হতে হয়েছে। এগুলো চরম মানবতাবিরোধী অপরাধ। এজন্য আওয়ামী লীগকে বিচারের সম্মুখীন হতেই হবে।’

অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, আহমেদ আযম খান, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এসআর/পিআর