>> পরোয়ানা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শ্রীপুরের মেয়র আনিছুর>> কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ নেই : থানা পরিদর্শক>> তিনি এখন আইনের চোখে পলাতক : দুদক আইনজীবী
Advertisement
অর্থ আত্মসাতের চার মামলায় গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে আড়াই বছর আগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। কিন্তু পরোয়ানা মাথায় নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ও নিয়মিত অফিসও করছেন।
মেয়রের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও এ বিষয় কিছুই জানেন না সংশ্লিট থানা পুশিল। তারা বলছেন, মেয়রের নামে কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা তাদের হাতে পৌঁছায়নি।
আরও পড়ুন >> শ্রীপুরের মেয়র ইন্দোনেশিয়ায়, কারাগারে কে?
Advertisement
গাজীপুরের শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) জাবেদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, শ্রীপুরের মেয়র আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে আমাদের থানায় কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ নেই। পরোয়ানা থাকলে তো আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
এ প্রসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী রুহুল ইসলাম খান বলেন, অর্থ আত্মসাতের চার মামলায় মেয়র আনিছুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তিনি এখন আইনের চোখে পলাতক। মামলা চারটি ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে সাক্ষীর পর্যায়ে রয়েছে।
ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের পেশকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০১৬ সালের মে মাসে গাজীপুরের ২নং বিশষ জজ আদালত শ্রীপুরের মেয়র আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। চার মামলার নথি বিচারের জন্য আমাদের আদালতে এসেছে। মামলা চারটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে গত ৯ সেপ্টেম্বর মেয়র আনিছুর রহমান সেজে ওই চার মামলায় জামিন নিতে এসে ধরা পড়েন মেয়রের আস্থাভাজন যুবলীগকর্মী নূরে আলম মোল্লা। ২৬ অক্টোবর ‘অপরের রূপ ধারণ করে প্রতারণা’র অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক অখিল চন্দ্র সরকার।
Advertisement
মামলায় মেয়র আনিছুর রহমানকেও আসামি করা হয়। ১৫ নভেম্বর নূরে আলম মোল্লার জামিন হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন মেয়র আনিছুর রহমান।
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক পাভেল মিয়া বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। এ মামলার আসামি নূরে আলমের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে মেয়রের বিষয়ে কিছুই জানাননি তিনি।
অর্থ অত্মসাতের চার মামলার মধ্যে এক মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, পৌরসভার রশিদের মাধ্যমে আদায় করা ট্যাক্স ও বিবরণীর ৪৩ লাখ ৭৬ হাজার ১০৭ টাকা পৌরসভার তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন তিনি। ওই ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম মামলা করেন। ২০১৬ সালের ১২ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিট দাখিল করেন।
আরেক মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০১০ সালে শ্রীপুর পৌরসভার অন্তর্গত পাঁচটি হাট-বাজার থেকে সাত লাখ ৩৫ হাজার ২০০ টাকা আত্মসাৎ করে। ওই ঘটনায় ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন।
অপর দুই মামলায়ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদক। চার মামলা ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। মেয়র আনিছুর রহমান চার মামলায় পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
জেএ/এনডিএস/পিআর