খেলাধুলা

সন্ধ্যার পর শিশিরে ভিজে একাকার সাগরিকা, ভাবনায় টস

শেরে বাংলার উইকেট রহস্যময়। দুর্বোধ্য। কখন কোন চেহারা ধারণ করে, বলা দায়। কখনো পেস বোলারদের বল লাফিয়ে ওঠে। আবার কোনো কোনো সময় স্পিনাররা বাড়তি টার্ন পান। কিছু ডেলিভারি নিচুও হয়। এমন সব অনিশ্চয়তায় ভরা পিচে যে গেম প্ল্যান আঁটা খুব কঠিন।

Advertisement

তারপরও একটা ভাল ফর্মূলা অনুস্মরণ করেন মাশরাফি। বাংলাদেশ অধিনায়কের বোধ-উপলব্ধি- শেরে বাংলায় আগে ব্যাট করে ২৫০ থেকে ২৬০ করতে পারলে জয়ের সম্ভাবনা থাকে বেশি। তাই টস জিতে সঙ্গে সঙ্গে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

যে কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত এবং ইমরুলের ১৪৪ রানের অসাধারন ইনিংস, দুই তরুণ তুর্কী সাইফ উদ্দীনের ফিফটি ও মিঠুনের ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৫০ ওভার শেষে ২৭১ রানের স্কোর গড়ে জিতেছে বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামে কি করবে মাশরাফির দল? গেম প্ল্যান কি? ঢাকার মত টস জিততে পারলে আবারো আগে ব্যাটিং? নাকি এবার আগে-ভাগে ফিল্ডিং বেছে নেয়া হবে? অনেকের মনেই এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। অধিনায়ক মাশরাফি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। ঢাকায় যেমন আগেভাগেই বলে দিয়েছিলেন, আমার মনে হয় উইকেটে যত অনিশ্চয়তাই থাকুক, তারপরও শেরেবাংলায় প্রথম ব্যাট করে আড়াইশোর বেশি রান করার অর্থ লড়াকু পুঁজি।

Advertisement

কিন্তু জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতলে কি করবেন টাইগার ক্যাপ্টেন? তার সরাসরি উত্তর দেননি তিনি। তবে অনেক কথার ভিড়ে একটা সুস্পষ্ট ইঙ্গিত কিন্তু আছে। সাগরিকার উইকেট সম্পর্কে বলতে গিয়ে মাশরাফি বলেছেন, এখানে (জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের) উইকেট অনেক ফেয়ার (পরিষ্কার) থাকে। তার মানে জটিলতা কম। দুর্বোধ্য নয়। ফ্লাট হয়। আরও বেশি রান ওঠে। সে ক্ষেত্রে কোনো অঘটন না হলে বড় রান আশা করছি।’

তারপর বলেন, ‘আগে ব্যাটিং করলে উইকেটে কতটুকু টার্ন হবে সেটা মেটার করবে। আবার পরে ব্যাটিং করলে শিশির থাকবে। তখন আরও স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করা যাবে।’

খুব ভাল করে লক্ষ্য করুন, শেষ দিকের কথাটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। পরে ব্যাট করলে শিশির পড়বে- তখন আরও স্বচ্ছন্দে ব্যাটিং করা যাবে। এমন কথা কিন্তু বলেছেন মাশরাফি। তার মানে তিনি জানেন, সাগরিকায় কার্তিক মাসের একদম প্রথম ভাগে শিশির পড়ে। কিওরেটর জাহিদ রেজা বাবু উইকেট নিয়ে একটি কথা না বললেও সাগরের কাছাকাছি সাগরিকায় যে এখন শিশির পড়ে- তা জানাতে ভোলেননি।

এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার আগে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আউট ফিল্ড শিশিরে ভিজে একাকার। তার মানে দ্বিতীয় সেশনের এক ঘণ্টা যেতেই শিশির পড়ে মাঠ ভিজে যাবে। তারপর রাত যত বেশি হবে, শিশিরে আউট ফিল্ড ততই ভিজবে। স্পিনারদের বল গ্রিপ করা কঠিন হবে। তাদের কার্যকরিতাও যাবে কমে। তবে পেসারদের বল স্কিড করতে পারে। শিশিরে ভেজা পিচে তা করেও।

Advertisement

সে কারণেই হয়ত কাল দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিততে পারলে মাশরাফির আগে বোলিং বেছে নেয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাতে স্পিনাররা দিনের আলোয় নির্বিঘ্নে বল করতে পারবেন। আর পরের সেশনে জিম্বাবুয়ান স্পিনার মাভুতা (লেগস্পিনার), সিকান্দার রাজার (অফস্পিনার) বোলিং কার্যকরিতা যাবে কমে। পেসারদের বল স্কিড করলে স্ট্রোক খেলাও সহজ হয় খানিকটা। তাই শিশিরে ভেজা শেরে বাংলায় টস জিতলে মাশরাফি যদি ফিল্ডিং বেছে নেন, অবাক হবার কিছু থাকবে না।

এআরবি/আইএইচএস/এমএস