বলা হচ্ছে এই জিম্বাবুয়ে আগের মতো সবল, শক্তিশালী আর সমৃদ্ধ নয়। অনেক দুর্বল দল। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, ব্রেন্ডন টেলর, সিকান্দার রাজা ও এল্টন চিগুম্বুরারাই ভালো ছিল। তবে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্রান্ট ফ্লাওয়ার, গাই হুইটাল, ডেভিড হটন, নেইল জনসন, এ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল, মারে গুডউইন, এ্যাডো ব্রেন্ডেস, হিথ স্ট্রিকদের মানের নয়। তাদের সাজানো জিম্বাবুয়ে ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। তাই বাংলাদেশ তখন শক্তিতে পেরে উঠতো না। এখন দৃশ্যপট বদলেছে। এখন জিম্বাবুয়ের শক্তি কমেছে। বাংলাদেশ আগের চেয়ে অনেক বেশি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী দল।
Advertisement
পরিসংখ্যানও দিচ্ছে যার প্রমাণ। সর্বশেষ ১১ লড়াইয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একটিও জয় নেই জিম্বাবুয়াইনদের। শুধু হারই সঙ্গী। এবার বাংলাদেশে এসে প্রথমে বিসিবি একাদশের কাছে ১৮০’র নিচে অলআউট হয়ে ৮ উইকেটে হেরেছে। আর ২১ অক্টোবর মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে শেষ দিকে শন উইলিয়ামস (৫০) আর কাইল জারভিসের (৩৭) হাত ধরে ২৪৩ পর্যন্ত গেলেও এক পর্যায়ে দু‘শর নিচেই অলআউট হবার সম্ভাবনা জেগেছিল জিম্বাবুয়ের।
এমন এক তুলনামূলক কমজোরি দলের বিপক্ষে লাইনআপে খানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোই যায়। বিশ্বকাপের আগে দল নিয়ে খানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার যে এখনই সময়! এমন কথা চারিদিকে। ভক্ত ও সমর্থকদের বড় অংশের মন্তব্য, যেহেতু বিশ্বকাপের আগে এটাসহ চারটি সিরিজ আছে, তাই এখন থেকে নতুন প্রতিভার উন্মেষ ঘটাতেই কিছু সম্ভাবনাময় তরুণকে সুযোগ দিয়ে দেখা যেতে পারে।
যেহেতু সিরিজে এরই মধ্যে ১-০‘তে এগিয়ে দল। চট্টগ্রামে কি লাইনআপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে? বসে থাকা নাজমুল হোসে শান্ত, আরিফুল হক আর আবু হায়দার রনিকে কাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খেলানোর সম্ভাবনা কতটা? আজ দুপুরে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে অধিনায়ক মাশরাফিকে বলেন,‘দেখুন আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। করছি না যে, তা নয়।’
Advertisement
তবে পরোক্ষনেই মুখ দিয়ে আরও একটা কথাও বেরিয়ে এসেছে অধিনায়কের। যার পরতে পরতে সতর্ক ও সাবধানের চিহ্ন। মাশরাফির কথা, ‘বর্তমানে যে অবস্থায় আছি তাতে আমাদের ক্লিনিক্যাল ফিনিশ করার কথা যেমন ভাবতে হয়, জয় নিশ্চিতের সম্ভাব্য সব কাজগুলো যেমন সুচারুভাবে সম্পাদনের চেষ্টা করতে হয়, সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করতে হয়। এর পাশাপাশি যারা খেলেনি বা নতুন, সেই নাজমুল হোসেন শান্ত, আরিফুল হক ও আবু হায়দার রনিকে সুযোগ দেয়ার বিষয়টিও মাথায় থাকছে বা রাখতে হচ্ছে।’
সুযোগ না পাওয়া তরুণদের কথা বলতে গিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘নাজমুল হোসেন শান্ত খুবই সিরিয়াস অনুশীলন করে যাচ্ছে। তার এখন একটা সুযোগ দরকার। আর আরিফুল তো সেই এশিয়া কাপ থেকে শুধু অনুশীলন করে যাচ্ছে। সেও একটা সুযোগের দাবিদার। আবু হায়দার রনিও এশিয়া কাপে ভালোই খেলেছিল। কাজেই এ বিষয়গুলো আমাদের মাথায় থাকছে। দেখা যাক কী করা যায়।’
অধিনায়কের কথায়ই একটা পরিষ্কার ইঙ্গিত আছে। তাহলো তারা নতুন ও প্রতিভাবানদের সুযোগ দিতে চান, তবে সেটা নিজেরা নিরাপদ অবস্থানে থেকে এবং জয় নিশ্চিত করে।
প্রথম ম্যাচ জেতায় দল এখন ১-০’তে এগিয়ে। কাল বুধবার দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত। তাই ২৪ অক্টোবরের খেলাটি আসলে বাংলাদেশের সিরিজ নিশ্চিতের ম্যাচ। জিতলেই সিরিজ নিজেদের। এমন এক ম্যাচে তাই পরীক্ষা-নিরীক্ষার সম্ভাবনা খুব কম। তাই বিকল্প ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত, লেট অর্ডার আরিফুল, আর বাঁ-হাতি পেসার আবু হায়দার রনির কারোরই আগামীকালকের ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা কম।
Advertisement
হ্যাঁ, মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে ব্যথা আছে। ওদিকে অসুস্থতা কাটিয়ে রুবেলও আজ নেটে পুরে গতিতে বল করেছেন। মোস্তাফিজের ব্যথা থাকলে তাকে খেলানোর ঝুঁকি নেয়া হবে না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাকে দেখে বিশ্রাম দেয়া হতেও পারে। তবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কথা শুনে মনে হলো কোনই রদবদল নেই। মঙ্গলবার রাতে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘নাহ দলে কোন পরিবর্তন নেই। প্রথম ম্যাচের ১১ জনই কাল খেলবে। তবে হ্যাঁ সিরিজ নিশ্চিত হলে শেষ ম্যাচে কিছু রদবদল করার ভাবছি আামরা।’
তার মানে কাল জিতে সিরিজ নিশ্চিত হলেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তার আগে নয়।
এআরবি/আইএইচএস/পিআর