দেশজুড়ে

ইলিশ মিলছে না কচা ও সন্ধ্যা নদীতে

পিরোজপুরের কচা, সন্ধ্যা ও কালিগঙ্গা নদীতে ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে। জেলেরা নদীতে দিন-রাত জাল ফেলে আপ্রাণ চেষ্টা করলেও তাদের জালে ধরা পড়ছে না স্বাদের ইলিশ। ফলে জেলেদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। জেলে পরিবারগুলো বিভিন্ন ব্যাংক ও বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল গড়ে নদীতে নেমেছেন। কিন্তু সারাদিন জাল ফেলেও মাছ না পাওয়ায় তারা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এখন অনেক জেলে নদীতে যাচ্ছেনা। নদীর তীরে নৌকায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। অন্য কোনো আয়ের উৎস না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন উপজেলার হাজার হাজার জেলে। বেশিরভাগ জেলে আবার ব্যাংক ও এনজিও  ঋণের কিস্তির ভয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন না। তাদের পরিবারের সদস্যরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। কাউখালীর জেলে পাড়ায় ১০ হাজারেরও বেশি ইলিশ জেলে পরিবার রয়েছে। সরেজমিনে সেখানে এক করুণ চিত্র দেখা যায়। জেলেদের স্ত্রীরা অভাবের তাড়নায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তারা জানান, বিভিন্ন এনজিও আনা ঋণের টাকা প্রতি সপ্তাহে পরিশোধ করতে হয়। তারা সংসার চালাতে পারছেন না কিস্তি দেবেন কিভাবে? এ দুশ্চিন্তায় তাদের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। কাউখালীর ৭২৮টি জেলে পরিবার সরকারি সাহায্য পেলেও তা জেলেদের সংখ্যার তুলনায় খুবই সামান্য। জেলে মোশারফ হোসেন ও শুভ হালদার জাগো নিউজকে জানান, তাদের একমাত্র পেশা ইলিশ ধরে বিক্রি করা এবং তা দিয়ে সংসার চালানো। ইলিশ মাছ নদীতে না পেয়ে তারা হতাশ। বর্তমানে সরকার সহজ শর্তে মৎস্য অধিদফতর থেকে লোন দিলে আমরা এ করুণ অবস্থা থেকে রেহাই পাবো। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা জাগো নিউজকে জানান, উপজেলার জেলেদেরকে পুনর্বাসনের জন্য চার মাসের জন্য প্রতি মাসে ৪০ কেজি চাল দেয়া হচ্ছে। উল্লে­খ্য, কচা নদীর সুস্বাদু ইলিশ পিরোজপুরের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা হতো। এমনকি ভারতের জামাই ষষ্ঠী অনুষ্ঠানে কচা নদীর ইলিশ খুব জনপ্রিয় ছিল। এছাড়া বিশেষজ্ঞদের ধারণা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সমস্ত নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছে না। হাসান মামুন/এমজেড/এমএস

Advertisement