দুপুর ১২টা। রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অদূরে চাঁনখারাপুলে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা বিশ্বের সর্ববৃহৎ ৫শ শয্যা বিশিষ্ট ‘শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’ এর ফটকের সামনে বেশ কিছু মানুষ জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। গেটের সামনে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য জটলা থেকে একেক জনকে ডেকে মেটাল ডিটেক্টর মেশিন দিয়ে চেক করে প্রবেশ করাচ্ছেন। ভেতরে ও ভবনের বিভিন্ন তলায় সেনা সদস্যের অবস্থান করতে দেখা যায়।
Advertisement
পূর্ব-পশ্চিমমুখী ১৮ তলা ভবনের পশ্চিমদিকে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত বিশাল আকারের ব্যানার ঝুলতে দেখা যায়। তাতে লেখা শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের শুভ উদ্বোধন। পাশেই মাচায় ঝুলে শ্রমিকদের টিউটলাইটে ‘শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’ লেখাটি ঝোলানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। পথচারীদের অনেককেই থমকে দাঁড়িয়ে ভবনের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি, ভীষণ ব্যস্ত ও ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে কাজের তদারকি করছেন বলে জানান।
তার এ ব্যস্ততার কারণ- রাত পোহালেই রাজধানীর চাঁনখারপুলে নির্মিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নিজের নামে স্থাপিত এ ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন করবেন।
Advertisement
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর চাঁনখারপুলে ৯১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় দুই একর জমিতে ১৮ তলাবিশিষ্ট এই ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথমে ৫২২ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে ৯১২ কোটিতে দাঁড়ায়।
২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ ইনস্টিটিউটটি নির্মাণের অনুমোদন পায়। ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁনখারপুলে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২৭ এপ্রিল বাংলদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এর নির্মাণ কাজ শুরু করে।
জানা গেছে, বহুতল বিশিষ্ট এ ইনস্টিটিউটটির মাটির নিচে তিনতলা বেজমেন্ট। সেখানে গাড়ি পার্কিং ও রেডিওলজিসহ আরও কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিভাগ রাখা হচ্ছে। ইনস্টিটিউটটিতে ৫০০টি শয্যা, ৫০টি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, ১২টি অপারেশন থিয়েটার ও অত্যাধুনিক পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড থাকবে।
আকাশছোঁয়া এ ভবনটি তিনটি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। একদিকে থাকবে বার্ন ইউনিট, অন্যদিকে প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট আর অন্য ব্লকটিতে করা হবে অ্যাকাডেমিক ভবন। দেশে প্রথমবারের মতো কোনো সরকারি হাসপাতালে হেলিপ্যাড সুবিধা রাখা হচ্ছে।
Advertisement
আজ (মঙ্গলবার) সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের শেষ মুহূর্তের কাজে সংশ্লিষ্ট সকলে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে তিনদিন আগে থেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের আউটডোর থেকে জরুরি বিভাগের আশপাশের রাস্তার ফুটপাত থেকে ভাসমান দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যরা ইনস্টিটিউটের চৌহদ্দিতে টহল বৃদ্ধি করেছে।
এমইউ/এমবিআর/আরআইপি