সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের অশালীন মন্তব্য এবং তার বিরুদ্ধে মামলা ও আগামা জামিন প্রশ্নে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং মন্ত্রিসভার নারী সদস্যরাও নীরব ছিল- এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, দেশের নারী সাংবাদিকরা কী ভূমিকা পালন করছেন? তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে একটা মামলা না-ই হতে পারে, আরও তো মামলা হতে পারে। আপনারা মামলা করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যা করার করবে, আমরা যা করার করবো। সঙ্গে সঙ্গে তিনি এটাও বলেন, আমাদের নারী সংগঠন যারা আছ তারা এ বিষয়ে প্রতিবাদ করবে।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন একটা মামলা হয়, তখন ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়। ওয়ারেন্ট ইস্যুর সঙ্গে সঙ্গে এখানে কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর ছিল। বিষয়টি যখন বিচার বিভাগের, সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তো গিয়ে হামলা করতে পারে না। এছাড়া তিনি সেখানে আগাম জামিন চেয়েছেন। কোর্ট তাকে আগাম জামিন দিয়েছেন। তাও পাঁচ মাসের।’
মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি এমন একটা জঘন্য কথা বললেন একজন নারী সাংবাদিককে এবং প্রকাশ্যে, সারা বাংলাদেশ কেন সারা বিশ্ব দেখেছে, কীভাবে তিনি একজন নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একথা বললেন। এখন কোর্ট যেখানে তাকে জামিন দিয়েছেন, সেখানে আমার কিছু বলার নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মইনুল হোসেন কে তা কি আপনারা জানেন? এই মইনুল হলেন ৭১’র দালাল। তৎকালীন সময় সে তো দালালি করে বেড়াতো। দৈনিক ইত্তেফাক থেকে সিরাজ উদ্দিনকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন এই মইনুল, বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর খুনি হুদা ফারুক, রশিদরা একটা দল করেছিল এই খুনিদের নিয়ে একটি দল গঠন করেন এই মইনুল। এর কাছ থেকে ভালো এবং ভদ্র ব্যবহার কীভাবে আশা করেন। শুধু তাই নয়, সে ইত্তেফাকে একটা মার্ডারও করে। নিজে মার্ডার করে নিজের ভাইকে ফাঁসানোরও প্রচেষ্টা করেছিল। এমনকি তাদের কাকরাইলের বাড়ি নিয়েও সমস্যা আছে। যারা সাংবাদিকরা আছেন তারা খুঁজে দেখেন। কাজেই ওনার গুণের শেষ নেই।
Advertisement
মইনুল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার আরেকটা গুণের কথা শোনেন, উনি ব্যারিস্টারি পড়তে গেলেন লন্ডনে। সেই যুগে লন্ডনে পড়াশোনা করানো কম কথা নয়। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মইনুলকে ব্যারিস্টারি পড়াতে পাঠালেন। আমাদের দুই পরিবারের মধ্যে একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। প্রয়োজনে সহযোগিতাও করা হতো। ব্যারিস্টারি পাস করে আসার পর উনি সাহেব হয়ে গেলেন।
তিনি বলেন, মানিক চাচা কিন্তু সব সময় পান্তা ভাত খেতেন। পান্তা ভাত উনি খুব পছন্দ করতেন। আর ওনার ছেলে সাহেব হয়ে বাংলাদেশের খাবার আর খেতে পারেন না, সাহেবি খাবার খেতে হবে। স্বাভাবিকভাবে চাচি এসে মার কাছে খুব বলতো, আমি এখন কী করি। আমার ছেলে ইংরেজি খাবার খাবে। তার জন্য আলাদা বাবুর্চি রাখা হলো সেই সময়ের ১০০ টাকা দিয়ে। উনি হলো কাক ময়ূরপুচ্ছ বলে ময়ূর সাজার চেষ্টা করেছিলেন। ইংরেজি খাওয়া দাওয়া উনি শিখে ছিলেন। কিন্তু ইংরেজি ভদ্রতাটা শিখে আসেননি। কথা বলাটা শিখে আসেননি। এগুলো তো কারো জানার কথা নয়, আমি জানি। আরও অনেক তথ্য জানি, প্রয়োজনে পরে বলবো।
এফএইচএস/জেএইচ/পিআর
Advertisement