আইন-আদালত

‘জামায়াত নিয়ে মইনুল গর্বিত, আহত দেশবাসী’

‘তাদের (জামায়াতে ইসলামীর) সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় ব্যারিস্টার মইনুল যদি বলেন, আমি গর্বিত, তা হলে দেশবাসী আহত হয়’- এমন মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

Advertisement

কুড়িগ্রামের মানহানির মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ছয় মাসের জামিন দেয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বক্তব্যে সারাদেশের নারী সমাজ বিক্ষুব্ধ এবং আহত হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। বলেন, ‘ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে আজকেও (কুড়িগ্রামের মামলা) একটি মামলার শুনানি হয়েছে। উনি মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কে যে উক্তি করেছেন সেই উক্তিতে আমাদের সারাদেশের নারী সমাজ বিক্ষুব্ধ ও আহত।’

‘তার (মইনুল) বক্তব্য উল্লেখ করে একটি নালিশি মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মামলায় মইনুল হোসেন জামিন নিতে হাইকোর্টে এসেছিলেন। আমি শুনানিকালে আদালতকে স্পষ্টভাবে বলেছি, উনি একজন নারীকে উদ্দেশ্য করে যে উক্তি করেছেন তাতে সমগ্র নারীসমাজ আহত হয়েছে, বিক্ষুব্ধ হয়েছে এবং আমাদের দেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়েছে। কারণ ওই অনুষ্ঠানটি সমগ্র বিশ্বের সকলেই দেখেছে।’

Advertisement

আদালতে মইনুলের জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘শেষ কথা হলো, জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের সঙ্গেও তার (ব্যারিস্টার মইনুল) যোগাযোগ আছে বলে দম্ভোক্তি করে টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়েছেন, মামলার এজাহারেও এই কথা উল্লেখ আছে।’

মাহবুবে আলম বলেন, ‘যেহেতু জামায়াতে ইসলামীর কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই তাই তার অঙ্গ-সংগঠন ছাত্রদেরও (ছাত্র শিবির) আইনগত বৈধতা নেই। তারপরও উনি (ব্যারিস্টার মইনুল) যদি এভাবে বলেন যে, তাদের (জামায়াতে ইসলামী) সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় আমি গর্বিত। তাহলে সারাদেশবাসী আহত হন। আমি এই কথাগুলো আদালতকে বলেছি। এছাড়া উনি যদি জামিন চান তবে তাকে নিম্ন আদালতে গিয়ে জামিন চাইতে হবে। এটা এমন কোনো মামলা নয় যে, হাইকোর্ট থেকে জামিন নিতে হবে। যা হোক, অনেকক্ষণ শুনানি করে আদালত তাকে ছয় সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন।’

শুনানিকালে আদালত বলেন, ‘যেহেতু যিনি সংক্ষুব্ধ, তিনি এই মামলা (কুড়িগ্রামের মামলা) করেননি; তাহলে এই মামলা কীভাবে চলে?’ এ প্রসঙ্গে মাহবুবে আলম বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে আদালতকে বলেছি, কেন এই মামলাকারী নারী বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। এটা বলা যাবে না যে, উনাকে (মাসুদা ভাট্টি) একা বললে নারীসমাজ বিক্ষুব্ধ হবে না। আমাদের দেশের সমগ্র নারীসমাজ এই ধরনের ঢালাও বক্তব্যে আহত হয়েছে এবং ক্ষুব্ধ হয়েছে।’

এর আগে নারী সাংবাদিককে কটূক্তির অভিযোগে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে দায়ের হওয়া পাঁচ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোটের বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

Advertisement

আদালতে ব্যারিস্টার মইনুলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও এ কে এম এহসানুর রহমান।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাফি আহমেদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম মাসুদ চৌধুরী ও স্বপন দাস।

এর আগে ২১ অক্টোবর কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল কোর্টে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে পাঁচ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। জেলার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অ্যাডভোকেট মাকসুদা বেগম বেবি বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৫০৪/৫০৫ ও ৫০৯ ধারায় মামলাটি করেন।

এফএইচ/এমএআর/এমএস