>> কোনো রাষ্ট্রীয় পদ পাওয়ার ইচ্ছা আমার নেই : ড. কামাল>> জামায়াত-তারেকের সমর্থন হিসেবে ঐক্যফ্রন্টকে দেখার সুযোগ নেই >> আমরা জনমত গঠনের মধ্য দিয়ে আন্দোলনে আছি
Advertisement
অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সংলাপ চেয়ে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে সরকারকে চিঠি দেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে থাকা গণফোরাম সভাপতি ড.কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থার নিশ্চয়তার জন্য জনগণ ঐকমত্য। দেশের জনগণ এমন একটি নির্বাচন দেখতে চায়, যে নির্বাচনে তারা ভয়ভীতি ও প্রভাব ছাড়া তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবেন।’
ড. কামাল হোসেন বলেন, একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।যারা ক্রমাগতভাবে আমার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ ভিত্তিহীন ব্যক্তিগত আক্রমণ করে চলেছেন তাদের আমি এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বা কোনো রাষ্ট্রীয় পদ পাওয়ার ইচ্ছা আমার নেই। এটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুমাত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমি কাজ করে যাব।
Advertisement
তিনি বলেন, জনগণের উদ্বেগ ও আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দেশের নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ৭টি দাবির ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি।
তাদের এই ৭টি দাবি হলো -বর্তমান সংসদ ভেঙে দেয়া, মন্ত্রিসভার পদত্যাগ, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় নির্বাহী বিভাগ বা সরকার গঠন, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয়া, বাকস্বাধীনতা ও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করা, জনগণের আস্থা আছে এমন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করা।
ড. কামাল হোসেন বলেন, এই ৭ দফা দাবি প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা জাতীয় পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মতৈক্যে পৌঁছেছি, যার ফলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে একটি উদ্যোগ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের ঐক্য বজায় রাখার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কাজ করে যাবে, যাতে করে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বত্র গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য একটি কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া যায়।
Advertisement
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট লক্ষ্যগুলোর প্রতি সংকল্পবদ্ধ। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে কাজ করে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত দলগুলোর মধ্যে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। জামায়াতে ইসলামী বা তারেক রহমানসহ অন্য কোনো বিশেষ নেতার প্রতি সমর্থন হিসেবে এই উদ্যোগকে দেখার সুযোগ নেই।’
সরকার আপনাদের দাবি না মানলে কোনো আন্দোলনে যাবেন কি না এমন প্রশ্নে ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, ‘আমরা জনমত গঠনের মধ্য দিয়ে আন্দোলনে আছি। বিভাগীয়, জেলা পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করছি। এরপর দাবি না মানলে তা গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে।’
গণফোরাম আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো মোস্তফা মহসিন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/জেডএ/পিআর