জাতীয়

সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেফতারে পূর্বানুমতি ‘সংবিধানপরিপন্থী’

ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেফতারে পূর্বানুমতির বিধান রেখে খসড়া ‘সরকারি চাকরি আইন ২০১৮’ সংবিধান-পরিপন্থী ও বৈষম্যমূলক বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

Advertisement

গভীর উদ্বেগের পাশাপাশি খসড়া আইনটি পাশ না করে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন >> চার্জশিটের আগে সরকারি কর্মচারী গ্রেফতারে অনুমতি লাগবে

সোমবার এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রস্তাবিত ধারাটি বৈষম্যমূলক ও সংবিধান-পরিপন্থী। কারণ একই অপরাধে জড়িত হলে সাধারণ নাগরিক ও জনপ্রতিনিধিদের জন্য যেখানে পূর্বানুমতির প্রয়োজন নেই সেখানে কোনো বিশেষ মহলের জন্য পূর্বানুমতির বিধান সংযুক্ত করা আইনের চোখে সব নাগরিকের সমান অধিকারের যে সাংবিধানিক বিধান তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’ তিনি আরও বলেন, ‘আইনটি এভাবে পাশ হলে বর্তমান সরকারের আমলে প্রণীত ও বাস্তবায়নরত জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের সঙ্গেও এটি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী হবে। এছাড়া উল্লেখিত ধারাটি ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ ধারার সঙ্গেও সরাসরি সাংঘর্ষিক, যেখানে আমলযোগ্য অপরাধে জড়িত থাকলে বা জড়িত থাকার ব্যাপারে মামলা হলে বা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য বা সন্দেহ থাকলেও বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।’

Advertisement

“এছাড়া জাতীয় সংসদে উত্থাপিত খসড়া ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেফতারে পূর্বানুমতি গ্রহণের যে বিধান সন্নিবেশিত হয়েছে তা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের সততা, স্বচ্ছতা, উন্নততর পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন নিশ্চিতের পরিপন্থী ও উদ্বেগজনক হবে।”

‘উল্লেখিত বিধান রেখে আইনটি পাশ হলে বাস্তবে সরকারি খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিরোধ দূরে থাকুক, আইনের ছত্রছায়ায় এ ধরনের অপরাধ সুরক্ষা পাবে এবং এর ব্যাপকতা বাড়ার ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পাবে’- উল্লেখ করে বিধানটির পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি, বিশেষ করে সংসদীয় কমিটির প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘এমন বাস্তবতায় এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি আইন যা এতো দীর্ঘকাল আলোর মুখ দেখেনি, অতি স্বল্পমেয়াদে বর্তমান অধিবেশনে তড়িঘড়ি করে এটি অনুমোদিত হলে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সাময়িক সুবিধার জন্য কিনা- এরূপ প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়া স্বাভাবিক মনে করছে টিআইবি।’

এছাড়া দেশের বৃহত্তর স্বার্থে পরিপূর্ণ খসড়া আইনটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত করে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞসহ সব অংশীজনের মতামত গ্রহণের দাবি জানান ড. জামান।

জেইউ/এমএআর/পিআর

Advertisement