আইন-আদালত

মইনুল ও জাফরুল্লাহর জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় দেয়া আগাম জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

Advertisement

রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সোমবার তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা চারটি মামলার আগাম জামিন স্থগিত চেয়ে পৃথক আবেদন করে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাফি আহমেদ জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গতকাল রোববার ঢাকা ও জামালপুরের দু’টি মানহানির মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের পাঁচ মাসের জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি আব্দুল হাফিজ ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

অপরদিকে, আশুলিয়া থানায় চাঁদাবাজি ও জমি দখলের পৃথক দুই মামলায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। পুলিশ অভিযোগপত্র না দেয়া পর্যন্ত এ জামিন মঞ্জুর করা হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল হাফিজ ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

এর আগে, সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির করা মানহানির মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর।

Advertisement

একই দিনে অপর একটি মানহানির মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন জামালপুরের একটি আদালত।

গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ২০ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক ফারজানা ইয়াসমিন লিটা। পরে সেটি আমলে নিয়ে জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোলায়মান কবির আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

ওই দুই মামলায় উচ্চ আদালতে আবেদন করে জামিন নেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।

গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টক শো ‘একাত্তরের জার্নাল’ এ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি প্রশ্ন করেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আপনি যে হিসেবে উপস্থিত থাকেন- আপনি বলেছেন আপনি নাগরিক হিসেবে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, আপনি জামায়াতের প্রতিনিধি হয়ে সেখানে উপস্থিত থাকেন।’

Advertisement

মাসুদা ভাট্টির এই প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’

অপরদিকে, গত ১৫ অক্টোবর রাতে আশুলিয়া থানায় জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের মোহাম্মদ আলী ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আনিছুর রহমান।

মামলায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছাড়াও আরও তিনজনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন-গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দেলোয়ার হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশির (৫৫) ও নূর মোহাম্মদের ছেলে আওলাদ হোসেন (৪৮)।

মামলার এজহারে বলা হয়, আশুলিয়ার পাথালিয়া মৌজায় ৪.২৪ একর জমির মালিক মোহাম্মদ আলী, আনিছুর রহমান ও তাজুল ইসলাম। আসামিরা দীর্ঘদিন এ জমি দখলের চেষ্টা করছে। ১৪ অক্টোবর আসামিরা ওই জমিতে হাজির হয়ে বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নির্দেশে এ জমি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছে হস্তান্তর করতে হবে অথবা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে এক কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে। বাদীরা এ টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা ভাঙচুর করেন।

এরপর ১৯ অক্টোবর চাঁদা দাবি, ভাঙচুর ও জমি দখলের অভিযোগ এনে আশুলিয়া থানায় আরও একটি মামলা করা হয় জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে। আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকার হাসান ঈমাম বাদী হয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ দু’জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশির ও গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেলোয়ার হোসেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার মালিকানাধীন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশের একটি জমি দীর্ঘ দিন ধরে জবরদখলের চেষ্টার পাশাপাশি জমির মালিকের কাছে কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। মামলায় জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ আরও তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়।

এফএইচ/এমএআর/এমএস