প্রবাস

মানবতার আরেক নাম মনির বিন আমজাদ

 

ট্রাভেল ভিসায় মালয়েশিয়ায় গিয়ে চরম বিপদের মুখে পড়েন আসহব আলী। কপাল খারাপ হলে যা হয়, অবশেষে দেশে ফিরলেন। তবে হুইল চেয়ারে করে। আসহবের দেশের বাড়ি নরসিংদীর করিমপুর গ্রামে। অসম্ভবকে সম্ভব করেলেন বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব মালয়েশিয়ার সভাপতি মনির বিন আমজাদ।

Advertisement

কাজ শুরু করার আগেই তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় আসহবের। ফলে দেশটিতে অবৈধ হয়ে পড়েন। একদিকে অবৈধ অন্যদিকে কোন কাজ নেই। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া মালয়েশিয়ায় থাকা খুবই কঠিন।

আসহব আলী চলতি বছরের ১২ জুন ব্রেইন স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৩ জুন মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় কুয়ালালামপুর জেনারেল হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগে। অবস হয়ে পড়ে আসহবের হাত পা। হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ফের অবৈধ হয়ে পড়েন। টানা ৫ মাস চলে তার চিকিৎসা। দীর্ঘ ৫ মাসে হাসপাতালের ৫৭ হাজার রিঙ্গিত বিল বকেয়ার কারণে তাকে রিলিজ দেয়া হয়নি। এর মধ্যে তার ট্রাভেল পাসের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দূতাবাসের কল্যাণ সহকারী মুকসেদ আহমদ ছুটে যান হাসপাতালে। খোঁজখবর নেন আসহব আলীর। অবৈধ থাকায় তাকে আর্থিক সহযোগিতা করতে পারছে না দূতাবাস। দূতাবাসের পক্ষ থেকে সেখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো রকম সহযোগিতার আশ্বাস পাননি।

এক পর্যায়ে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব মালয়েশিয়ার সভাপতি মনির বিন আমজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মনির বিন আমজাদ ছুটে যান হাসপাতালে। আসহবের চিকিৎসার অর্থ পরিশোধ এবং তাকে দেশে পাঠাতে এগিয়ে আসেন তিনি।

Advertisement

এরই মধ্যে প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনির বিন আমজাদ দেশটির সরকার দলীয় আমানা পার্টির শীর্ষ স্থানীয় নেতা আব্দুল ওয়াহিদ বিন আহমাদ ইব্রাহিম ও পিকে আর এর নেতা রাজালি বিন লাতিফের সঙ্গে আলোচনা করেন হাসপাতালের বিল মওকুফ করার জন্য। দেশটির দুই শীর্ষ স্থানীয় নেতা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতালের বিল মওকুফ করে দেন তারা।

মওকুফের আগে হাল ছাড়েননি প্রেস ক্লাব সভাপতি রিলিজ দেয়ার আগের দিন ১৮ অক্টোবর হাসপাতালের বকেয়া বিল পরিশোধ করতে নগদ ৫৭ হাজার রিঙ্গিত নিয়ে ছুটে যান হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনিরকে জানান, বিল পরিশোধ করা লাগবে না। পরিশোধ ছাড়াই আসহবকে মুক্তি দেয়া হলো। বেঁচে গেল ৫৭ হাজার রিঙ্গিত। বিমান টিকিট ও আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ ৪৭ হাজার রিঙ্গিত সমপরিমাণ ৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকা আসহবের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মনির বিন আমজাদ।

এ বিষয়ে প্রেস ক্লাব অব মালয়েশিয়ার সভাপতি মনির বিন আমজাদ এ প্রতিবেদককে জানান, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফেলে প্রায় ১৫ দিন ছোটাছুটি করে আসহব আলীকে দেশে পাঠাতে সক্ষম হয়েছি। বিদেশের মাটিতে যার যার স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে দূতাবাসের পাশাপাশি অসহায় প্রবাসীদের সেবা দেয়া হলে আমাদের মুখ উজ্জ্বল হবে।

এমআরএম

Advertisement