ধর্ম

এবার তাবলিগের পাল্টাপাল্টি ইজতেমার প্রস্তুতি ঢাকায়

তাবলিগ জামাতের দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা ঢাকা জেলায় ইজতেমা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মাওলানা সাদ-এর বিতর্কিত বক্তব্য ও আলেম-ওলামাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে দেশব্যাপী চলছে ওয়াজাহাতি জোড়। এ জোড়ের বিকল্প হিসেবেই দিল্লির নিজামুদ্দীনপন্থীদের এ আয়োজন।

Advertisement

আগামী ২৬, ২৭, ২৮ অক্টোবর মোতাবেক শুক্র, শনি ও রোববার মিরপুরের ১২ নম্বরে ইস্টার্ন হাউজিং ময়দানে এ ইজতেমার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিজামুদ্দীন মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভি গ্রুপ।

এ ইজতেমাকে ঘিরে তাদের লক্ষ্য কয়েক লক্ষাধিক লোককে এ ইজতেমায় জমায়েত করা। আর লক্ষ্যেই তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে। ৩ দিনের এ ইজতেমায় ঢাকা জেলার নতুন ও পুরাতন সাথীরা অংশ নেবে।

মিরপুর ১২ নম্বরের ইস্টার্ন হাউজিং ময়দানের ইজতেমায় বাংলাদেশের নিজামুদ্দীনপন্থী মুরব্বিগণ বয়ান পেশ করবেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা জিয়া বিন কাসেম ও মালঅনা মুনির বিন ইউসুফসহ কাকরারই মরকাজের নিজামুদ্দীনপন্থী শুরা সদস্যরা।

Advertisement

আরও পড়ুন > যেভাবে বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হলো

উল্লেখ্য যে, মাওলানা সাদ কান্ধলভি নিজেকে তাবলিগের আমির দাবি ও তার কিছু বিতর্কিত বক্তব্যের পর বাংলাদেশ ও ভারতের দেওবন্দের আলেমদের মধ্যে মতোবিরোধ দেখা দেয়। আর সে আলোকে আলেম-ওলামারা মাওলানা সাদকে সংশোধন ও যেভাবে তাবলিগ আগে থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে, সে রীতি ও পদ্ধতির ওপর চলতে দেয়ার আহ্বান জানান।

আলেম-ওলামার এ দাবির প্রেক্ষিতে তাবলিগ জামাতের দাওয়াতে দ্বীনের এ মেহনত ও কর্মীরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। অনেক চেষ্টার পরও তা আর আগের ধারায় ফিরে নি।

গত কিছুদিন ধরে দেশব্যাপী আলেম-ওলামারা ওয়াজাহাতি জোড় করে মাওলানা সাদকে তওবার আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তাবলিগ যেভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে সে ভাবে পরিচালনার আহ্বান করেন। আর এতে নিজামুদ্দিনপন্থীরা কোনঠাসা হয়ে পড়ে।

Advertisement

এবার নিজামুদ্দিন মারকাজপন্থীরা ঢাকার মিরপুরে ৩ দিনের পাল্টাপাল্টি ইজতেমার আহ্বান করে কোনঠাসা অবস্থান থেকে বের হয়ে আসার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

যেখানে তারা কয়েক লক্ষাধিক অনুসারীদেরকে জড়ো করার টার্গেটও নির্ধারণ করে। আর এতে তাবলিগ জামাতের পক্ষ-বিপক্ষ স্পষ্ট জোড়ালোভাবে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ইতিমধ্যে নিজামুদ্দিনপন্থীরা ইজতেমার জন্য জেলায় জেলায় নিজেদের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করছে। এ ইজতেমার মাধ্যমে ঢাকা থেকে আলাদাভাবে তারা দাওয়াতি কাজও শুরু করবে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং ইজতেমা মাঠ থেকে আলাদা আলাদা জামাত সারাদেশে পাঠানো হবে বলেও পরিকল্পনা রয়েছে।

নিজামুদ্দিনপন্থী মাওলানা জিয়া বিন কাসেম বলেন, দাওয়াত ও তাবলিগের কাজকে চলমান রাখতেই এ ইজতেমার আয়োজন। ইজতেমা সফল করতে জোরদার প্রস্তুতি চলছে। সারাদেশ থেকে এ ইজতেমায় লোক জমায়েত হবে। এখান থেকে ১২০০ জামাত বের হবে বলে তিনি দাবি করেন।

ঢাকা জেলার নতুন ও পুরাতন সাথীদের স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ইজতেমার প্রায় বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে।

তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে ঢাকায় ৩ দিনের এ ইজতেমা আয়োজন করতে সরকারি অনুমোদন পাবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।

বিশেষ করে ওয়াজাহাতি জোড় থেকে ঘোষিত শর্ত দিক-নির্দেশনায় বাংলাদেশে মাওলানা সাদপন্থীদের কার্যক্রমের নিষেধাজ্ঞায় আলেম-ওলামা ঐক্যমত পোষণ করেছেন। সরকারের উর্ধ্বত কর্মকর্তারাও এতে সম্মত হয়েছেন বলে জানা যায়।

এমএমএস/আরআইপি