যে ঘুমন্ত শহরকে জাগাবেন বলে একদিন রুপালি গিটার হাতে অলিগলিতে ঘুরে বেরিয়েছেন, সেই শহরে আজ চিরদিনের মতো ঘুমিয়ে গেলেন কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে তাকে।
Advertisement
শনিবার (২০ অক্টোবর) মাগরিবের নামাজের আগে চট্টগ্রাম নগরের এনায়েত বাজারের চৈতন্যগলি বাইশমহল্লা কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। মায়ের পাশে দাফনের বিষয়টি ছিল আইয়ুব বাচ্চুর অন্তিম ইচ্ছা।
এর আগে চট্টগ্রামের বায়তুল ফালাহ মসজিদের ময়দানে আইয়ুব বাচ্চুর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকেই তাকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় কবরস্থানে। দাফনের সময় তার বাবা মোহাম্মদ ইছহাক, মামা আব্দুল হালিম লোহানী ও ছেলে আহনাফ তাজওয়ারসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নামাজে জানাজায় ইমামতি করেন জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ আবু তালেব মো. আলাউদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন আইয়ুব বাচ্চুর বাবা মোহাম্মদ ইছহাক, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান, পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, নগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ও যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু।
Advertisement
এর আগে বেলা ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আইয়ুব বাচ্চুর কফিন রাখা হয় তার নানার বাড়ি নগরের পূর্ব মাদারবাড়ি বালুর মাঠে। এরপর বেলা ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত তার কফিন সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয় জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে। সেখানে বাদ আসর জানাজা হয়। জানাজায় হাজারও মানুষ অংশ নেয়। জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দান পরিণত হয় জনসমুদ্রে। মাঠ ছাড়িয়ে পাশের সড়কেও সাধারণ মানুষ অবস্থান নেয়। আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ছাদে জড়ো হন নারী ও শিশুরা।
এদিকে জানাজার আগে প্রিয় শিল্পীকে একনজর দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে ভিড় করে হাজার হাজার মানুষ। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে হাতে ফুলসহ নানা প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা যায়। অনেকে প্রিয় শিল্পীর নিথর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
গত (১৮ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার সকালে না ফেরার দেশে চলে যান আইয়ুব বাচ্চু। শুক্রবার বাদ জুমা জাতীয় ঈদগাহে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরদেহ নেয়া হয় তার গানের স্টুডিও মগবাজারে ‘এবি কিচেনে’। সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর মরদেহ নেয়া হয় চ্যানেল আই কার্যালয়ে। সেখানে তৃতীয় জানাজা হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহ রাখা হয় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
আবু আজাদ/বিএ/আরআইপি
Advertisement