সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংলাপের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ (শনিবার) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত ‘ফরমায়েশী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল কর’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
Advertisement
২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এ সমাবেশের আয়োজন করে। সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘বিরোধী দলের সাথে আলাপ করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ বের করুন। এ ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই। আমরা বারবার বলছি।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ২৩ তারিখে জনসভা করতে চেয়েছিল, নাশকতা হতে পারে এজন্য অনুমতি দেয়া হয়নি, আর ওখানে চরমোনাই জনসভা করছে, সেখানে নাশকতা নেই। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সাহেব রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে সরকারি টাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসসভা করছে...সেখানে নাশকতা নেই। বিরোধী দল কথা বলতে গেলে নাশকতা হয়। ডা. জাফরুল্লাহর মতো লোক নাশকতা করতে চায়, এসব বাদ দিয়ে সিধে পথে আসুন।’
ফখরুল করেন, ‘শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি গোটা বাংলাদেশে। গায়েবি মামলার সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। মোট মামলার সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯০ হাজার। গায়েবি মামলায় এখনও পর্যন্ত আসামি করা হয়েছে ৫ লাখ। এই সরকার আসার পর থেকে সামগ্রিকভাবে আমাদের আসামির সংখ্যা ২৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।’
Advertisement
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে হাসপাতালে এনে সেখানেও ন্যূনতম সুবিধা তাকে দেয়া হচ্ছে না। অনেক ঘটনার পরে তার চিকিৎসার মোটামুটি একটা ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু সেটাও সঠিকভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে না।’
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হওয়ার পর তাদের শেষ রক্ষা হবে না। গোটা বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠবে। সেই কারণে তারা মুক্তি দিতে চায় না। তারা একটা জিনিসি ভুলে গেছেন যে দেশনেত্রী কারাগারে থাকুন আর বাইরে থাকুন তিনি এদেশের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ। তার মুক্তির জন্য এদেশের মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। ’
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের একজন কমিশনার প্রকাশ্যে বলে দিয়েছেন যে আমি সুষ্ঠু নির্বাচনের যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছিলাম তা বিবেচনা করা হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন বিভক্ত হয়ে পড়ছে। অথচ নির্বাচন কমিশন থাকতে হবে একটা। নির্বাচন কমিশনে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা রাষ্ট্রীয় সঙ্কট। একজনকে জোর করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়া একটা নির্বাচন কমিশন হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘এটা সংবিধানের পরিপন্থী এবং রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ। আমরা অনেক আগেই বলেছি, এই নির্বাচন কমিশন কাজ করতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হতে হবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সবচেয়ে অসহায় ব্যক্তি। সকালে এক কথা বলেন, বিকেলে আরেক কথা বলেন। আমরা সকল রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের কথা বলেছিলাম। বললেন, আমাদের এখতিয়ার নেই। তাহলে এখতিয়ার কী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানো?’
Advertisement
জাগপা সহ-সভাপতি তাসমিয়া প্রধানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, জাগপা প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত শফিউল আলম প্রধানের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
কেএইচ/এনএফ/জেআইএম