খেলাধুলা

সৌম্যের সেঞ্চুরিতে প্রস্তুতি ম্যাচে উড়ে গেল জিম্বাবুয়ে

অফফর্মের কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে জায়গা হয়নি সৌম্য সরকার। তিনিই প্রস্তুতি ম্যাচে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হাঁকালেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের হার না মানা ১০২ রানের ইনিংসে ভর করে সফরকারি জিম্বাবুয়েকে ৮ উইকেট আর ৬৬ বল হাতে রেখে হারিয়েছে বিসিবি একাদশ।

Advertisement

সৌম্য সরকারের চোখ ধাঁধানো ইনিংসটি ছিল ১১৪ বলের। ১০২ রানের ইনিংস তিনি সাজিয়েছেন ১৩টি বাউন্ডারি আর ১টি ছক্কায়। ৪৮ বলে ৩৩ রান করে মোসাদ্দেক হোসেন স্বেচ্ছা অবসরে যান।

এর আগে, বিসিবি একাদশের পক্ষে বল হাতে ইনিংসের সূচনা করেছিলেন এবাদত হোসেন চৌধুরী ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন। এদের দুজনের বিধ্বংসী বোলিংয়ে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে। মাঝে তাদের বিশ্রাম দেন অধিনায়ক, জুটি গড়ে ফেলে সফরকারীরা। শেষে আবার আক্রমণে আসেন এবাদত ও সাইফ। আবারো এ দুজনের তোপে দিশেহারা হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।

সাভারের বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা পরিষদের (বিকেএসপি) তিন নাম্বার মাঠে চলমান প্রস্তুতি ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং প্রস্তুতিটা পুরোপুরি ভেস্তে দিয়েছেন মূলত এবাদত এবং সাইফউদ্দীনই। এ দুজনের বোলিং তোপে মাত্র ১৭৮ রানেই অলআউট হয়েছে জিম্বাবুয়ে, তাদের ইনিংসে বাকি ছিলো আরও ২৮টি বল।

Advertisement

টসে জিতে ব্যাট করতে নেমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ক্রেইগ আরভিনকে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন এবাদত হোসেন চৌধুরী, আউট হওয়ার আগে আরভিন করেন ১ রান।

পরের ওভারের শেষ বলে জিম্বাবুইয়ানদের অন্যতম ভরসার পাত্র ব্রেন্ডন টেলরকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন। তার ব্যাট থেকে আসে ৬ রান। তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও শন উইলিয়ামস। তখনই আবার আঘাত হানেন এবাদত। ফিরিয়ে দেন উইলিয়ামসকে।

নিজের প্রথম স্পেলে এবাদত হোসেন চৌধুরীর বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৫-২-৭-২! এবাদতকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেয়ার পরে উইকেট নেয়ার খাতায় নাম লেখান মোহর শেখ অন্তর ও ইমরান আলী। দলীয় ২৮ রানে সিকান্দার রাজাকে ফেরান মোহর, ৪৭ রানের মাথায় ইমরানের শিকারে পরিণত হন পিটার মুর।

মাত্র ১৬ ওভারেই ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসা জিম্বাবুয়ের ইনিংসের হাল ধরেন অধিনায়ক মাসাকাদজা এবং সাবেক অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা। দুজন মিলে ২৮ ওভারে গড়েন ১২৪ রানের জুটি। ভদ্রস্থ করেন দলের সংগ্রহটা। ঠিক তখনই দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে আসেন এবাদত ও সাইফউদ্দীন।

Advertisement

৪৪তম ওভারের শেষ বলে চিগুম্বুরাকে সরাসরি বোল্ড করার মাধ্যমে জুটি ভাঙেন সাইফ। হাফসেঞ্চুরি থেকে মাত্র তিন রান দূরে থাকতে ফেরেন চিগুম্বুরা। তিনি ফিরে গেলেও উইকেটে টিকে থেকে সেঞ্চুরি তুলে নেন মাসাকাদজা।

শুরুতে রয়ে সয়ে খেলা মাসাকাদজা নিজের ফিফটি করেন ৯১ বল খেলে। ফিফটি পরেই শুরু করেন মেরে খেলা। দ্বিতীয় পঞ্চাশ করতে নেন আর মাত্র ৪৩টি বল। সব মিলিয়ে ১৩৪ বলে ১৪ চার ও ১ ছক্কার মারে সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। তবে সেঞ্চুরির পর আর তাকে বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে দেননি এবাদত।

ইনিংসের ৪৫তম ওভারে চার বলের মধ্যে তিন উইকেট নেন এবাদত। জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০২ রান করে ফেরেন মাসাকাদজা। তার উইকেট দিয়েই এবাদত পূরণ করেন নিজের পাঁচ উইকেট। ৪৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ডোনাল্ড তিরিপানোকে বোল্ড করে জিম্বাবুয়ের ইনিংসে সিলমোহর বসিয়ে দেন সাইফ।

নয় ওভারের স্পেলে তিন মেইডেনের সাহায্যে মাত্র ১৯ রান খরচায় ৫টি উইকেট নেন এবাদত। ৭.২ ওভার বোলিং করে ৩২ রান খরচায় তিনটি উইকেট নেন সাইফ। এছাড়া মোহর শেখ ও ইমরান আলী নেন ১টি করে উইকেট।

এমএমআর/আরআইপি